শ্রম আইন পাস: গৃহপরিচারক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাও শ্রমিক হিসেবে সুরক্ষা পাবেন

অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের কর্মী, গৃহপরিচারক এবং নাবিকসহ দীর্ঘদিন শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে থাকা শ্রমজীবীদের অধিকার নিশ্চিত করতে নতুন শ্রম আইন অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে এ আইন অনুমোদিত হয়।
বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি জানান, নতুন আইনে শ্রমের সংজ্ঞা আরও বিস্তৃত করা হয়েছে, যাতে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, গৃহপরিচারক এবং নাবিকদের ক্ষেত্রেও শ্রম আইনের বিধান প্রযোজ্য হবে। এর ফলে এতদিন আইনের বাইরে থাকা এ শ্রমজীবীরা এখন থেকে শ্রমিক হিসেবে আইনি সুরক্ষা পাবেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, 'এটি একটি ঐতিহাসিক আইন। দেশের প্রতিটি শ্রমিক, বিশেষ করে যারা এতদিন আইনের বাইরে ছিলেন, তাদের অধিকার রক্ষায় এটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।'
আইন উপদেষ্টা জানান, নতুন শ্রম আইনে মালিকদের দ্বারা শ্রমিকদের কালো তালিকাভুক্ত করার প্রথা সম্পূর্ণভাবে নিষেধ করা হয়েছে। পূর্বে অভিযোগের ভিত্তিতে অনেক মালিক শ্রমিকদের অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাওয়া বন্ধ করে দিতেন- এবার তা সম্পূর্ণ অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।'
আইন উপদেষ্টা বলেন, 'নারী শ্রমিকদের জন্য মাতৃত্বকালীন সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। একইসাথে, পুরুষ ও নারী শ্রমিককে একই কাজের জন্য ভিন্ন মজুরি দেওয়ার মতো বৈষম্যকে আইনে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।'
তিনি আরও জানান, নতুন শ্রম আইন অনুযায়ী, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও নিবন্ধন প্রক্রিয়া অনেক সহজ করা হয়েছে। শ্রমিকদের জন্য বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হয়েছে, যাতে আদালতে না গিয়েও বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায়।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, 'শ্রমিকদের দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতে একটি বিশেষ তহবিল গঠনের সিদ্ধান্তও অনুমোদন পেয়েছে। কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় আহত বা নিহত শ্রমিক ও তার পরিবারের পুনর্বাসন ও চিকিৎসা এ তহবিল থেকে দেওয়া হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'এ আইনে শ্রমিক-মালিক সম্পর্ককে আরও মানবিক ও ন্যায্য করার চেষ্টা করা হয়েছে। এটি শুধু শ্রমিক নয়, পুরো শিল্পখাতের জন্যই এক নতুন যুগের সূচনা করবে।'