'সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করতে আর কত বছর লাগবে?': উষ্মা প্রকাশ হাইকোর্টের

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার তদন্ত দীর্ঘ দিনেও শেষ না হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
রাষ্ট্রপক্ষ ও উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটিকে উদ্দেশ করে আদালত বলেছেন, 'সাগর-রুনির হত্যার ১৩ বছর পার হয়ে গেছে। এখনও তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ করতে আর কত বছর লাগবে?'
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। আদালত বলেন, 'দুইজন মানুষ মার্ডার হয়ে গেল? তাদের কারা হত্যা করল, কিছুই জানা গেল না। সারাদেশের মানুষ তাকিয়ে আছে এই মামলার দিকে।'
এক পর্যায়ে আদালত উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটির পক্ষে উপস্থিত থাকা পিবিআই কর্মকর্তা আজিজুল হককে উদ্দেশ করে বলেন, 'সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কত শতাংশ শেষ হয়েছে, আমাদের জানান। আমরা আর সময় দিতে পারবো না। শেষ বারের মতো ৬ মাস সময় দিচ্ছি।'
সাগর-রুনির পরিবারের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির আদালতকে বলেন, 'এই মামলার তদন্ত দীর্ঘ দিনেও শেষ না হওয়ায় আমরা বাইরে মুখ দেখাতে পারছি না। সবাই জানতে চায় তদন্ত কবে শেষ হবে। এই অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ই তদন্ত শেষ হওয়া উচিত। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন। রাজনৈতিক সরকার এলে এই মামলার তদন্ত আরও পিছিয়ে যেতে পারে।'
এরপর আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটিকে ৬ মাসের সময় দিয়ে আদেশ দেন।
গত বছরের ২৩ অক্টোবর হাইকোর্টের নির্দেশে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তে পিবিআই প্রধানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদমর্যাদার নিচে নয় পুলিশের একজন প্রতিনিধি, সিআইডির একজন প্রতিনিধি ও র্যাবের একজন প্রতিনিধিকে রাখা হয়েছে।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে টাস্কফোর্স গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তাদের ছয় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। বিভিন্ন বাহিনীর অভিজ্ঞ তদন্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে টাস্কফোর্স গঠন করতে বলা হয়।
এর আগে এই মামলার তদন্ত থেকে র্যাবকে সরিয়ে দিতে সম্পূরক আবেদন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এ আবেদন করা হয়।
গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর মামলায় নতুন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয় অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনিরকে।