বিএনপির কণ্ঠে ফ্যাসিবাদের সুর শোনা যায়: মিয়া গোলাম পরওয়ার

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বিএনপির কণ্ঠে আওয়ামী লীগের সুর শুনতে পাচ্ছি। বিএনপির কণ্ঠে ফ্যাসিবাদের সুরও শোনা যায়।
তিনি বলেন, 'নোয়াখালীর এক বিএনপি নেতা বলেছেন, বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে আ.লীগের মতো জামায়াতকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। বিএনপির কোনো নেতা যদি এই কথা বলেন, তাহলে বিএনপির কণ্ঠে আ.লীগের সুর শুনতে পাচ্ছি। বিএনপির কণ্ঠে ফ্যাসিবাদের সুর শোনা যায়। পায়ে পাড়া দিয়ে তারা সংঘাত, সংঘর্ষ করতে চায়। আমরা নির্বাচন পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে বিজয় অর্জন করব।'
রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাতক্ষীরার তালা ফুটবল মাঠে ছাত্র-যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, 'হিন্দু মানে নৌকা নয়, হিন্দু মানে দাঁড়িপাল্লা। দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে অতীতের সব শাসনের তুলনায় নিরাপদে থাকবেন। আমরা মানবিক বাংলাদেশ চাই, যেখানে জুলুম থাকবে না, নির্যাতন থাকবে না।'
তিনি আরও বলেন, 'আপনারা যদি রাষ্ট্রক্ষমতার দায়িত্ব দেন, লক্ষ লক্ষ তরুণকে কাজ দেব। উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ব। আমরা দুর্নীতিমুক্ত অর্থনীতি ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে সবাই ন্যায় ও ইনসাফ পাবে।'
জামায়াতের এই নেতা বলেন, 'সব সরকারের আমলে মন্ত্রী-এমপিরা দুর্নীতি করেছে। জাতীয় পার্টি, বিএনপি, আ.লীগ দেশ পরিচালনা করেছে। শুধু একটি দল বাকি আছে, সেটা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে গেলে পুরোনো শাসন আমরা চাই না।'
জুলাই সনদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'অনেকে প্রশ্ন করছেন, জুলাই সনদে সই করেও আবার আন্দোলন করছি কেন? প্রশ্ন হলো, জুলাই সনদটা বাস্তবায়ন হবে কীভাবে? সেটার আইনি ভিত্তির জন্য ঐকমত্য কমিশনে সিদ্ধান্ত হয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নামে প্রেসিডেনশিয়াল আদেশ জারি করতে হবে, তারপর গণভোট দিতে হবে, এরপর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে। কিন্তু একটি দল বাঁধা দিচ্ছে। এখন কিছু দল দেখছে, সংস্কার যদি হয়ে যায় তাহলে লুটপাট করতে পারব না, তাই সংস্কার ঠেকাও।'
নোয়াখালীতে শিবির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, 'তারা প্রমাণ দিয়েছে, সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে অঙ্গীকার আমরা করেছিলাম, তারা সেটার রক্ষা করতে পারছে না।'
ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, 'একটা দল ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছে, আমরা সংস্কার, অংশীদারিত্বের রাজনীতি, দেশ গঠন, অভ্যুত্থানে কোনো ভূমিকা রাখিনি। তোমরা নতুন দল রাজনীতিতে জামায়াত ইসলামীকে টক্কর দিতে গেলে অনেক দূর যেতে হবে। জন্ম নিয়েই বাবার সঙ্গে পাল্লা দিও না।'
তিনি আরও বলেন, 'ঐকমত্য কমিশনে লিখিতভাবে আমরাই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিয়েছি। অথচ নতুন গঠিত ছাত্রদের একটি দলের নেতা দুঃখজনক স্ট্যাটাস দিয়ে এই সমালোচনা করেছেন। উনারা চাচ্ছেন, আমরা উনাদের একটু সমালোচনা করি। কেউ তো উনাদের নাম নেয় না। আমরা আপনাদের অত আমলে নেই না। ধৈর্য ধরো, হাঁটো, এখনই সমালোচনা কোরো না। চব্বিশের আন্দোলনে তোমরা অনেক ভূমিকা রেখেছো। তোমরা জুলাই যোদ্ধা, তোমাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও দোয়া থাকবে।'
অশ্লীল ও অরাজনৈতিক ভাষা ব্যবহার কোনো রাজনৈতিক নেতার জন্য শোভনীয় নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।