তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারে দুর্নীতি সূচকের ভুল উদ্ধৃতি এফটির, সংশোধনের আহ্বান টিআইবির

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে যে সাক্ষাৎকার দেন, তা প্রতিবেদন আকারে প্রকাশের সময় দুর্নীতির একটি সূচকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গত সোমবার (৬ অক্টোবর) তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি)।
সেখানে এক জায়গায় উল্লেখ করা হয়, "বিএনপি'র আগের আমলে (২০০১–২০০৬) বাংলাদেশ টানা পাঁচ বছর বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের তালিকায় ছিল।"
এবিষয়ে আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) টিআইবি জানিয়েছে, এটি তথ্যগত ভুল এবং বেশকিছু বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমেও তা একইভাবে ছাপানো হয়েছে।
এবিষয়ে টিআইবির ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল তাদের দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) ১৯৯৫ সাল থেকে প্রকাশ করে আসছে। এতে বাংলাদেশকে প্রথমে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ২০০১ সালে, যে সময় জরিপকৃত সবদেশের মধ্যে সবচেয়ে কম স্কোর ছিল বাংলাদেশের। তখন ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার। এরপরের চার বছর টানা বাংলাদেশ সূচকের সর্বনিম্ন স্কোর করে, যখন ২০০২-২০০৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার। সুতরাং, এফটি যে বলেছে, বাংলাদেশ বিএনপির আমলেই টানা পাঁচ বছর দুর্নীতির শীর্ষে ছিল এটি তথ্যগত ভুল।
সিপিআই অনুযায়ী, দুর্নীতির ধারণার মাত্রাকে ০ (শূন্য) থেকে ১০০ (এক শ)–এর স্কেলে নির্ধারণ করা হয়। এই পদ্ধতি অনুসারে স্কেলের ০ (শূন্য) স্কোরকে দুর্নীতির ব্যাপকতা সর্বোচ্চ এবং ১০০ স্কোরকে দুর্নীতির ব্যাপকতা সর্বনিম্ন বলে ধারণা করা হয়। অর্থাৎ, স্কোর কম হওয়ার অর্থ দুর্নীতির মাত্রা বেশি।
তাই এ ভুল আমলে নিয়ে টিআইবি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের সঠিক ও নিশ্চিত তথ্য তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছে। এবিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নাহলে যেকোনো প্রকার ভুল বোঝাভুঝি সৃষ্টি হতে পারে, বা এই তথ্যের ভিন্ন অর্থ দাঁড় করানো হতে পারে।
টিআইবির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই এই ত্রুটিপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর দাবির বিষয়ে এফটির সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি সংশোধনী প্রকাশের অনুরোধ করা হয়েছে।
টিআইবি আরও জানায়, সিপিআই সূচক তৈরি ও প্রকাশ করে তাদের মূল সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল। সেখানে টিআইবি কোনো ভূমিকা রাখে না। ফলে টিআইবির নিজস্ব গবেষণার বিশ্লেষণ বা তথ্য এতে অন্তর্ভুক্ত করার কোনো সুযোগ নেই। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের অন্যান্য দেশের চ্যাপ্টারের মতোই টিআইবি শুধু বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ে মূল সংস্থার সিপিআই সূচকের ফলাফল তুলে ধরে।