খাগড়াছড়ির সেই মারমা কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত মেলেনি

খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীর ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সংঘটিত অবরোধ ও সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যু ঘটলেও, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ওই কিশোরীর শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে করা মেডিকেল পরীক্ষার ১০টি কাউন্টে রিপোর্ট নরমাল আসায় চিকিৎসকরা ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে মত দিয়েছেন।
হাসপাতালের গাইনোকোলজিস্ট জয়া চাকমার নেতৃত্বে তিন চিকিৎসকের স্বাক্ষরিত সেই রিপোর্টের একটি কপি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর হাতে এসেছে। তবে খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ সাবেরকে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি।
ডা. জয়া চাকমার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি প্রতিবেদনের ফলাফল অস্বীকার না করলেও টিবিএসকে বলেন, 'এটি একটি গোপনীয় প্রতিবেদন। এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।'
এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়ার পথে খাগড়াছড়ি পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের অষ্টম শ্রেণির এক মারমা কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওইদিন রাত ১১টার দিকে এলাকার একটি ক্ষেত থেকে অচেতন অবস্থায় কিশোরীটিকে উদ্ধার করা হয়।
পরদিন ভুক্তভোগীর বাবা খাগড়াছড়ি সদর থানায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। একই দিন কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
ঘটনার পরদিন পুলিশ একজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে ও অপরাধীদের বিচারের দাবিতে 'জুম্ম ছাত্র-জনতা' নামের একটি সংগঠন ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেয়। ২৮ সেপ্টেম্বর অবরোধ চলাকালে জেলার গুইমারা উপজেলার রামসু বাজারে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত ও ১৬ জন আহত হন। দুষ্কৃতকারীদের আগুনে প্রায় ৮৫টি দোকান ও বসতঘর পুড়ে যায়, যার আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতি ২৫ কোটি টাকা।
ওই রাতে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেয় জুম্ম ছাত্র-জনতা। ২৯ সেপ্টেম্বর প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে সংগঠনটি অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।