৫ দাবিতে ঢাকাসহ সারা দেশে এবার ১২ দিনের কর্মসূচি দিল জামায়াত

জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে ১-১২ অক্টোবর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আজ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর একই দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল জামায়াত।
জামায়াতের ঘোষিত নতুন কর্মসূচিগুলো হলো-
১ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর: সারাদেশে গণসংযোগ, মতবিনিময় সভা, গোলটেবিল বৈঠক ও সেমিনার।
১০ অক্টোবর: রাজধানীসহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে গণমিছিল।
১২ অক্টোবর: সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াতে ইসলামী জুলাই সনদকে আইনগত ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে ডকট্রিন অব নেসেসিটি-এর বিভিন্ন নজির ও উদাহরণ তুলে ধরে সনদের আইনি ভিত্তির বিষয়ে জামায়াতে ইসলামী স্পষ্ট অবস্থান ব্যক্ত করেছে। এ লক্ষ্যে আইনি ও সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জামায়াতে ইসলামী সরকারের কাছে দুটি প্রস্তাব দিয়েছে।
১. জুলাই জাতীয় সনদের জন্য 'সংবিধান আদেশ' জারি করা।
২. নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়ন করে এর অধিকতর আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা।
নাহলে ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন গোলাম পরওয়ার।
তিনি আরও বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি জনগণের দাবিসমূহ কার্যকর করার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য জামায়াতে ইসলামী গত ১৫ সেপ্টেম্বর আন্দোলনের পাঁচ দফা গণদাবি জাতির সামনে তুলে ধরেছে। আমাদের পাঁচ দফা গণদাবি ইতোমধ্যেই জনগণের কাছে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। তাই সরকারের উচিত অবিলম্বে এসব দাবি মেনে নিয়ে জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ (সাবেক এমপি), মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আবদুর রহমান মূসা প্রমুখ।
যে পাঁচ দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলো হলো-
- জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা
- আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা
- অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা
- ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা
- স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।