‘আমরা জমিদার, জমিদারের ওপর হস্তক্ষেপ করলে মেনে নেব না’, চবি নিয়ে জামায়াত নেতার মন্তব্যে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা

জামায়াতে ইসলামীর নেতা সিরাজুল ইসলামের 'জমিদারি' মন্তব্যকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর রাত ২টার দিকে শতাধিক শিক্ষার্থী গোলচত্বরসহ এ এফ রহমান হল ও শহীদ ফরহাদ হোসেন হলে বিক্ষোভে নামেন। তারা স্লোগান দেন- 'চবি নিয়ে জমিদারি চলবে না', 'আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না', 'সন্ত্রাসীদের দালাল হুঁশিয়ার, হুঁশিয়ার'।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের জোবরা গ্রামে এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় জামায়াতের প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা এই এলাকার মালিক। আমরা জমিদারর, জমিদারের ওপর কেউ হস্তক্ষেপ করলে তা মেনে নেব না।'
তিনি আরও বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় যদি আমাদের যথাযথ সম্মান না করে, তবে আমরা জনগণ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।'
সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অফিস সম্পাদক হাবিবুল্লাহ খালেদ।
বিতর্কিত মন্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর শিক্ষার্থীদের তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিষয়টি ঘিরে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিবৃতি দেয়।
প্রচার সম্পাদক মো. ইসহাক ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়, 'শিক্ষার্থীদের জন্য অপমানজনক ও অহংকারী ভাষায় দেওয়া মন্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে।'
একই সঙ্গে সভায় উপস্থিত হাবিবুল্লাহ খালেদও 'প্রকৃত সত্য' তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে দুঃখ প্রকাশ করা হয়।
সভায় হামলা নিয়ে বিবৃতিতে আরও অভিযোগ করা হয়, হামলায় স্থানীয় ছাত্রদলের নেতারা সরাসরি জড়িত ছিলেন এবং অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা ছাত্রদলের ক্যাডার হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তবে অভিযোগ নাকচ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ সোহেল জানান, ছাত্রশিবির রাজনৈতিক স্বার্থে সংঘর্ষের দায় বিএনপি ও ছাত্রদলের ওপর চাপাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা দু'পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেছেন।
এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে সিরাজুল ইসলামের 'জমিদারি' মন্তব্য। তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।