ডাকসু নির্বাচন: হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ আপিল বিভাগে স্থগিত, ৯ সেপ্টেম্বর ভোটে বাধা নেই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ আপিল বিভাগ স্থগিত রেখেছেন। এর ফলে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ডাকসু নির্বাচনে আর কোনো আইনি বাধা রইল না।
আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতের আদেশের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে চেম্বার জজ আদালতের দেওয়া আদেশ ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বহাল রেখেছে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। এর অর্থ, নির্ধারিত তারিখে উৎসবমুখর পরিবেশে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানে আর কোনো সমস্যা নেই। তিনি নির্বাচন আয়োজনে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
শিশির মনির বলেন, 'আপিল বিভাগে যুক্তি উপস্থাপনকালে আমরা বলেছি, এই রিট করা হয়েছে 'মেলাফাইডি ইনটেনশনে'। কর্তৃপক্ষ ২১ আগস্ট প্রাথমিক ও ২৬ আগস্ট চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করে। সে সময় কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে আপত্তি তোলা হয়নি। অথচ ২৮ আগস্ট হঠাৎ করেই শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়, যা ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ও সম্পূর্ণ মেলাফাইডি ইনটেনশনে করা হয়েছিল।'
তিনি আরও বলেন, মামলার রুলই যেখানে হয়নি, সেখানে স্থগিতাদেশ কীভাবে সম্ভব—আমরা সেটি আদালতের সামনে উপস্থাপন করেছি। আদালত তা গ্রহণ করেছে এবং এর ফলে ফরহাদের প্রার্থীতায়ও আর কোনো বাধা নেই।
এদিকে গত সোমবার বিকেলেই ডাকসু নির্বাচন আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। সেদিন হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এ আদেশ দেন।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের ওপর শুনানিতে একইদিন বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি এস.কে. তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ডাকসু নির্বাচন আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ডাকসুর কেন্দ্রীয় কমিটি ও হল সংসদগুলোর নির্বাচন আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ডাকসু নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন বামজোট মনোনীত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলম।
রিটে বলা হয়, শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদ একসময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি কীভাবে এখন শিবির সমর্থিত প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নেন, তা প্রশ্নবিদ্ধ।
আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রিটটি দায়ের করা হয় গত রোববার।