‘কোর কমিটি’র বৈঠকে যেভাবে জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটকের সিদ্ধান্ত হয়েছিল

'কোর কমিটি'র বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ০১- এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে জবানবন্দিতে এ কথা জানান আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া এই সাবেক আইজিপি।
আল-মামুন বলেন, সমন্বয়কদের আটক রাখার প্রস্তাব দেয় ডিজিএফআই। প্রথমে তিনি এর বিরোধিতা করেছিলেন। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে অবশেষে রাজি হন। তৎকালীন ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদকে সমন্বয়কদের আটকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডিজিএফআই ও ডিবি তাদের আটক করে ডিবি হেফাজতে নেয়।
জবানবন্দিতে আল-মামুন আরও বলেন, সমন্বয়কদের ডিবি হেফাজতে নিয়ে আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আপস করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তাদের আত্মীয়-স্বজনকেও ডিবিতে নিয়ে চাপ দেওয়া হয়। সমন্বয়কদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে টেলিভিশনে বিবৃতি প্রদানে বাধ্য করা হয়। এ ব্যাপারে ডিবি প্রধান হারুন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল হারুনকে 'জিন' নামে ডাকতেন বলেও উল্লেখ করেন সাবেক এই আইজিপি। তিনি বলেন, হারুন সরকারের যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পারদর্শী ছিলেন।
কোর কমিটির বৈঠকে কারা থাকতেন, সে বিষয় আল-মামুন জানান, কোর কমিটির বৈঠকে তিনি, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত সচিব টিপু সুলতান, অতিরিক্ত সচিব রেজা মোস্তফা, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ, র্যাবের মহাপরিচালক হারুন অর রশিদ, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের প্রধানেরা উপস্থিত থাকতেন।