ড্যাপে বৈষম্যমূলক এফএআর ব্যবস্থা বাতিলের দাবি জমির মালিকদের

ডিটেইল এরিয়া প্লান (ড্যাপ)–এর এফএআর (ফ্লোর এরিয়া রেশিও) সিস্টেম ও কাঠা প্রতি ইউনিট সংখ্যা নির্ধারণের বিধান বাতিলের দাবি জানিয়েছে ঢাকা সিটি ল্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটির অভিযোগ, এসব পরিবর্তনে ঢাকার দুই লাখেরও বেশি জমির মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
রোববার (২৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক প্রফেসর ড. দেওয়ান এম এ সাজ্জাদ বলেন, নতুন ড্যাপে জমির মালিকদের স্বার্থ উপেক্ষা করে ভবনের উচ্চতা ও আয়তন অযৌক্তিকভাবে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
"আগে একই পরিমাণ জমিতে ১০তলা ভবন নির্মাণ করা যেত। বর্তমানে সেখানে মাত্র ৫তলা ভবনের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। এতে জমির মালিকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন," বলেন তিনি।
ড্যাপে এফএআর কমানো ও কাঠা প্রতি ইউনিট সংখ্যা হ্রাসের মাধ্যমে ভূমি মালিকদের ঠকানো এবং বৈষম্য সৃষ্টি করার অভিযোগ করেছেন প্রফেসর ড. দেওয়ান এম এ সাজ্জাদ। তিনি বলেন, "ড্যাপ পাশ হওয়ার পর নিয়ম ভেঙে ঘুষের বিনিময়ে অনেক ভবন তৈরি হচ্ছে। অথচ সঠিকভাবে নজরদারি করা হচ্ছে না।"
তিনি আরও বলেন, ড্যাপ কার্যকরের তিন বছরে ঢাকায় কোনো পরিকল্পিত সড়ক নির্মিত হয়নি। বরং এ সময়ে নদী–নালা ও খাল–বিল ভরাট হয়ে গেছে, অথচ সরকারের কোনো কার্যকর তদারকি নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সমন্বয়ক তানভীরুল ইসলাম চৌধুরী, কে এম এজাজ মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার হুমায়ূন কবির শিমুল, অ্যাডভোকেট রেজাউল হোসেন (সুপ্রিম কোর্ট), সাংবাদিক বাবলু রহমান, সৈয়দা আফসারুন নাহার লিজা প্রমুখ।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ২০২২–২০৩৫ সালের ড্যাপে বৈষম্যমূলক এফএআর সিস্টেম চালু করা হয়েছে। ঢাকার স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষের অধিকাংশ বসতবাড়ি থাকা এলাকাগুলোতে সর্বনিম্ন ১–৩ এফএআর নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ মাত্র কয়েকটি এলাকায় সর্বোচ্চ ৫–৬ এফএআর প্রযোজ্য করা হয়েছে। সংগঠনটি এ ধরনের বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা বাতিলের দাবি জানায়।
সম্মেলনে ঢাকা সিটি ল্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে চারদফা দাবি উপস্থাপন করা হয়: ২০০৮ সালের ইমারত নির্মাণ বিধিমালার আলোকে ড্যাপ ২০২৫–৩৫ ঘোষণা ও বাস্তবায়ন; বৈষম্যমূলক এফএআর সিস্টেম ও কাঠা প্রতি ইউনিট সংখ্যা বাতিল; নির্মাণ অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও রাজউকের হয়রানি বন্ধ; ড্যাপ সংশোধনী সংক্রান্ত সভাগুলোতে সংগঠনটিকে অংশীজন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা।
সংগঠনটির নেতারা জানান, দাবি আদায়ের জন্য প্রয়োজনে দেশের আদালত ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তারা লড়াই চালিয়ে যাবেন।