জামিনে মুক্তি পেলেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্লগার ফারাবী

দীর্ঘ এক দশক কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন জনপ্রিয় ইসলামী লেখক ও ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবী।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকাল সোয়া ১০টার দিকে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন।
তিনি জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালত থেকে তার জামিনের কাগজপত্র কারাগারে এসে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই-বাছাই করা হয়। জামিনের কাগজপত্র যাচাই শেষে তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
ফারাবী অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন।
এর আগে বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
আদালতে তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন সিনিয়র আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও মুহাম্মাদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান।
তারা আদালতে জানান, চলতি মামলার চার আসামির স্বীকারোক্তিতে ফারাবীর নাম নেই। কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষীও তার নাম বলেননি। এ ছাড়া তিনি নিজেও কোনো স্বীকারোক্তি দেননি। দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকার বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হয়।
পরে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। যদিও সরকারপক্ষ চেম্বার আদালতে জামিন স্থগিতের আবেদন করে। শুনানি শেষে চেম্বার আদালত 'নো অর্ডার' দেন। ফলে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল থাকে।
প্রসঙ্গত, লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায় আমেরিকায় বসবাস করতেন। ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশে আসার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। এ ঘটনায় তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা গুরুতর আহত হন।
পরে অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই বছরের ২ মার্চ সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে শফিউর রহমান ফারাবীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন।
মামলাটির তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। একই বছরের ৬ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ মোট ২৮ জন সাক্ষী উপস্থাপন করে। পরে ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং শফিউর রহমান ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে ২০২১ সালেই ফারাবী হাইকোর্টে আপিল করেছিলেন।