উখিয়ায় চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের বিক্ষোভ থেকে হেফাজতে নেওয়া ২৮ জনকে ৭ ঘণ্টা পর ছেড়ে দিল পুলিশ

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের কর্মসূচি থেকে হেফাজতে নেওয়া ২৮ জনকে সাত ঘণ্টা পর ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। আজ বুধবার বিকাল ৪টার দিকে উখিয়া থানা থেকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর আগে সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়ার ফলিয়াপাড়ায় আন্দোলনরত শিক্ষকদের কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে তাদের উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে জুলাই আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধিসহ ২৮ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে আন্দোলনকারীরা উখিয়া থানার ফটকের সামনে অবস্থান নেন।
আন্দোলনকারীদের অনেকেই দাবি করেন, হেফাজতে নেওয়া আন্দোলনকারীদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজার জেলার অন্যতম সাবেক সমন্বয়ক জিনিয়া শারমিন রিয়াও ছিলেন।
পরে থানায় যান স্থানীয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদ ও ছাত্রশিবিরের নেতারা। সেখানে দীর্ঘ বৈঠকের সর্বদলীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করে আলোচনার পর আটকদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সরওয়ার জাহান চৌধুরী জানান, বৈঠকে আটকদের ছেড়ে দেওয়াসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে কথা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর নির্যাতন এবং আটকের ঘটনায় জড়িতদের বিচার করতে হবে এবং আজকের ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি আরও জানান, গঠিত সর্বদলীয় কমিটি আগামী ২৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার কক্সবাজার সফরে শিক্ষকদের চাকরির বিষয়টি নিয়ে আলাপ করবে।
আরও পড়ুন: ১০ ঘণ্টা অবরোধের পর কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক ছাড়লেন চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা জানিয়েছেন, আজ সকালে ফলিয়াপাড়া রাস্তার মোড়ে তারা ৪০-৫০ জন অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছিলেন। তারা কোনো ধরনের জনদুর্ভোগ সৃষ্টি ছাড়া সড়কের একপাশে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি করছিলেন। একপর্যায়ে পুলিশ এসে তাদের সরে যেতে নির্দেশ দেয়। নির্দেশনা না শোনায় পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে।
সে সময় কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া কর্মকর্তা) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, 'সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমাতে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা সেখানে কয়েকজনকে হেফাজতে নিয়েছি। তাদের বিষয়ে যাচাই-বাচাই শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে আগের দিন চাকরিচ্যুতদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল।
উল্লেখ্য, একই দাবিতে গত সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উখিয়ার কোর্টবাজার স্টেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন চাকরিচ্যুত শিক্ষকেরা।