দলের কর্মীদের অসংযত আচরণ থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করলেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে দলের নেতা-কর্মীদের আচরণ নিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, 'জনগণকে বিরক্ত বা অসন্তুষ্ট করতে পারে—এমন অসংযত বা অপেশাদার আচরণ দলকে একটি অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখে ফেলতে পারে।'
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) এক আলোচনা সভায় নজরুল বলেন, ''আসন্ন নির্বাচনে আমাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণ যেকোনো পর্যায়ের নেতা বা কর্মীর আচরণে যদি অসন্তুষ্ট হয়, জনগণ ভীতসন্ত্রস্ত হয়, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে গোটা দল।'
তিনি আরও বলেন, 'আর গোটা দল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানে শহীদ জিয়া অসম্মানিত হওয়া, বেগম খালেদা জিয়া অসম্মানিত হওয়া, তারেক রহমান অসম্মানিত হওয়া।'
নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'আপনাদের একেবারে বিনীতভাবে অনুরোধ করব যে নিজেরা এমন কাজ করবেনই না, অন্য কেউ করলে সেটাকে বাধা দেবেন। আর না হলে অনভিপ্রেত সিচুয়েশন (পরিস্থিতি) হতে পারে।'
ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ-এ এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে নজরুল ইসলাম খান বলেন, সামনে একটা নির্বাচন আসছে, কেউ কেউ হয়তো পেছানোর চেষ্টা করতেছে। নির্বাচনে আমাদের তো জনগণের কাছে যেতে হবে। দলকে মর্যাদাবান করতে হবে। তাহলে শুধু আমরা ব্যক্তির কল্যাণের জন্য কাজ করতে পারব।'
তিনি বলেন, 'গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা অনেকটা বদলে গেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের নেতা-কর্মীদের আরও সততা, আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'তবেই আমরা ভবিষ্যতের বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস বদলাতে পারব।'
নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'ব্যক্তি অধিক গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে ব্যক্তি দল গঠন করে এবং দলই রাষ্ট্রের কল্যাণ করতে পারে।'
এই বিএনপি নেতা বলেন, 'ব্যক্তিগত জীবনে প্রত্যেকেরই শুধু প্রয়োজনীয় কাজেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। যা দল বা দেশের জন্য ক্ষতিকর, তা থেকে বিরত থাকতে হবে। বিএনপিকে আগামী দিনে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে।'
তিনি নেতা-কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দেন, 'গত ১৬ বছর বা তারও আগে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন—নিহত হয়েছেন, গুম হয়েছেন, বা বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন—তাদের প্রতি জীবিতদের একটি দায়িত্ব রয়েছে। তারা যদি জীবন না দিতেন, বিএনপি আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে পারত না।'
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
তিনি দলের সাবেক মহাসচিব ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, 'দেশ, গণতন্ত্র এবং বিএনপিকে একটি শক্তিশালী দল হিসেবে গড়ে তুলতে সালাম তালুকদারের অবদান অনস্বীকার্য।'
তিনি বলেন, 'এইচএম এরশাদকে পদত্যাগে বাধ্য করার গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সালাম তালুকদার নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।'
ড. মঈন খান বলেন, 'সালাম তালুকদারের অবদান বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিএনপির ইতিহাসে তিনি শুধু একজন দক্ষ সংগঠকই নন, বরং গণতন্ত্রের একজন সাহসী সৈনিক ছিলেন।'