১২ হাজার ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক’ মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সারাদেশে পুলিশের দায়ের করা ১২ হাজার 'রাজনৈতিক হয়রানিমূলক' মামলা প্রত্যাহারের আদেশ জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ৪৯৪ ধারায় এসব মামলা প্রত্যাহারের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার সরকারি কৌঁসুলিদের (পাবলিক প্রসিকিউটর) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সর্বশেষ ১০ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকা মহানগর, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, ঠাকুরগাঁও, নোয়াখালী ও দিনাজপুর জেলায় মোট ২৪১টি মামলা প্রত্যাহারের আদেশ দেয়। মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি ৪৯৪ ধারার আওতায় এসব মামলার বিচারপ্রক্রিয়া না চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য দুটি কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ—একটি মন্ত্রণালয় পর্যায়ে, অপরটি জেলা পর্যায়ে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির প্রধান এবং জেলা কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
রাজনৈতিকভাবে হয়রানিমূলক বা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আবেদনের শেষ সময় ছিল গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর। জেলা কমিটির সুপারিশ পাওয়ার পর মামলার যাচাই-বাছাই, তালিকা প্রণয়ন এবং প্রত্যাহার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির ওপর বর্তায়।
তবে শেষ সময় পর্যন্ত জেলা কমিটি থেকে বিশেষ কোনো তালিকা মন্ত্রণালয় পায়নি। সময় শেষ হওয়ার পর কয়েকজন জেলা প্রশাসক তালিকা পাঠাতে শুরু করলে, আবেদনের সময়সীমা বাড়ানো হয়। বর্তমানে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার বিষয়ে প্রতি সপ্তাহে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বৈঠক করছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি এখন পর্যন্ত ২৩টি সভা করে ১৭ হাজার মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে, যার মধ্যে ১২ হাজার মামলা প্রত্যাহারের আদেশ ইতোমধ্যে জারি করা হয়েছে। বেশিরভাগ মামলা বিশেষ ক্ষমতা আইন, অস্ত্র আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের অধীনে দায়ের হয়েছিল। প্রত্যাহার হওয়া মামলাগুলোর অধিকাংশই ২০১৩, ২০১৫, ২০১৭, ২০১৮, ২০২২ ও ২০২৩ সালের। এসব মামলায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীসহ হাজার হাজার আসামি ছিলেন।