এবার তিন দফায় ভোটার তালিকা, চূড়ান্ত তালিকা আসবে তফসিলের আগে: ইসি সচিব

নতুন আইনের সুযোগে এবারই প্রথম তিনটি পৃথক তালিকা প্রকাশ করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর মধ্যে তৃতীয় ও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে, জানিয়েছেন ইসির সিনিয়র সচিব মো. আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেন, 'ভোটার তালিকার আইন সংশোধন করায় জাতীয় নির্বাচনের তফসিলের আগে আমরা আরও একটা তালিকা প্রকাশ করব। অর্থাৎ এ বছর তিনটি তালিকা প্রকাশ হচ্ছে। তফসিল ঘোষণার এক মাস আগে পর্যন্ত যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য, তাদের অন্তর্ভুক্ত করে ওই তালিকা প্রকাশ করা হবে।'
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ইসি সচিব।
তিনি বলেন, 'এখন সিডিউল কবে ঘোষণা হবে বা নির্বাচনের তারিখ কবে তা না জানলে আমি চূড়ান্ত তালিকা করতে পারব না। তবে আইনের সংশোধনের সুবিধা হচ্ছে, নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ হলে তফসিলের আগেই চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা যাবে।'
তিনি আরও জানান, তৃতীয় তালিকা নির্বাচন হওয়ার সময়সীমার ওপর নির্ভর করবে।
ইসি সচিব বলেন, 'এ বছরে আমরা ২ মার্চ একটি তালিকা প্রকাশ করেছি, যা নিয়মিত প্রক্রিয়ার অংশ। এরপর বাদ পড়াদের অন্তর্ভুক্ত করতে হালনাগাদের কাজ করছি, যার তালিকা আগামী সপ্তাহে প্রকাশ করা হবে। এ তালিকায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যারা ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে ১৮ বছর পূর্ণ করেছে।'
এর আগে গত ২৪ জুলাই রাতে ভোটার তালিকা আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ভোটার তালিকা আইন-২০০৯ সংশোধন করে ভোটার তালিকা অধ্যাদেশ ২০২৫ জারি করা হয়।
নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন চাইলে বছরের যেকোনো সময়, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে পারবে। আগের নিয়মে ২ মার্চের আগে বা পরে এটি সম্ভব ছিল না।
অধ্যাদেশে বলা হয়, ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩-এর দফা (জ)-এ 'জানুয়ারি মাসের পহেলা তারিখ' শব্দগুলোর পর যুক্ত করা হয়েছে 'বা কমিশন কর্তৃক ঘোষিত অন্য কোনো তারিখ'।
আগের বিধান অনুযায়ী, প্রতি বছর ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হতো, কেবল তারাই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতেন। ফলে জানুয়ারির পর যারা ১৮ পূর্ণ করতেন, তারা ভোটের সুযোগ পেতেন না। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের উদাহরণ টেনে বলা হয়, ওই নির্বাচনের তালিকা প্রণয়ন হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারিতে ১৮ পূর্ণ করা নাগরিকদের নিয়ে। ফলে মধ্যবর্তী সময়ে ১৮ পূর্ণ করা অনেকেই ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হন।
তবে নতুন আইনে বলা হয়েছে, এখন থেকে জানুয়ারির ১ তারিখ ছাড়াও কমিশন ঘোষিত অন্য যেকোনো তারিখ পর্যন্ত যেসব নাগরিক ১৮ পূর্ণ করবেন, তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।
এছাড়া, অধ্যাদেশে আরও বলা হয়েছে, ভোটার তালিকা প্রতি বছর ২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত অথবা তফসিল ঘোষণার আগে ঘোষিত সময়ের মধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে হালনাগাদ করা হবে। ফলে এখন কমিশন প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো সময় চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে পারবে।