হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক কারাগারে

গত বছরের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় এক যুবদলকর্মী নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) গ্রেপ্তারের পর তাকে আদালতে হাজির করা হলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্লাহ এই আদেশ দেন।
এর আগে, সন্ধ্যা ৭ টা ৪৫ মিনিটের দিকে তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক খালেদ হাসান। এরপর ৮ টা ১৫ মিনিটের দিকে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী মধ্যে দিয়ে আদালতের এজলাসে ওঠানো হয়।
আটক রাখার আবেদনে বলা হয়, আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে মামলার বাদী মো. আলাউদ্দিনের ছেলে আব্দুল কাইয়ুমের মুখে ও বুকে গুলি লাগলে সে পুলিশ বক্সের সামনে লুটিয়ে পড়ে, এবং তার আশেপাশে থাকা আরও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। আসামি এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতি থাকাকালে ২০১১ সালের ১ মে হতে বিভিন্ন সময়ে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে দুর্নীতিমূলকভাবে প্রতারণার উদ্দেশ্যে জাল-জালিয়াতিপূর্বক প্রকৃত রায় হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছে। এ সংক্রান্ত নারায়ণগঞ্জ জেলাসহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা আছে।
পুলিশের আবেদনে আরও বলা হয়, আসামি একজন প্রভাবশালী বাক্তি। তাকে জামিনে মুক্তি দিলে প্রভাব বিস্তার করে মামলার তদন্তকার্যে ব্যাঘাত ঘটানোর সম্ভাবনা আছে, তাই বিচারের পূর্ব পর্যন্ত তাকে জেল হাজতে আটক রাখা আবশ্যক।
এদিন তার পক্ষের কোন আইনজীবী ছিলো না। শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে খায়রুল হককে আদালতে নেওয়া হবে এই সংবাদে বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও বিক্ষুব্ধ জনতা আগে থেকে আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন৷ এসময় তারা খায়রুল হককে দুয়োধ্বনি দিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় গত ১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় কাজলা পুলিশ বক্সের সামনে গুলিবিদ্ধ হন কিশোর আব্দুল কাইয়ূম আহাদ। পরে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আবুল হাসান তার দুই পায়ে ব্রাশফায়ার করলে ঘটনাস্থলে সে মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আলা উদ্দিন ৪৬৭ জনকে এজাহারনামীয় আসামি এবং অজ্ঞাতনামা ১ থেকে ২ হাজার জনকে আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন।
বিচারপতি খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অবসরের পর তিনি আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এবং শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৩ আগস্ট সেই পদ থেকে পদত্যাগ করেন।