রংপুরে এলপিজি স্টেশনের ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণে নিহত ১, আহত অন্তত ১৫

রংপুর শহরের সিও বাজারে আজাদ এলপিজি স্টেশনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এক প্রকৌশলী নিহত হয়েছেন। শনিবার দুপুরে এই ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। তাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাত দিন আগে স্টেশনের একটি ট্যাংকে গ্যাস লিকেজ ধরা পড়ে। ফলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে স্টেশনের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। শনিবার সকালে সেই লিকেজ মেরামতের সময় হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে মেরামতকাজে নিয়োজিত চারজনসহ অন্তত ১৫ জন গুরুতর আহত হন।
আহতদের মধ্যে প্রকৌশলী সোহাগকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের মধ্যে অধিকাংশই স্টেশনে কর্মরত ছিলেন বা পাশের দোকান ও ভবনে অবস্থান করছিলেন।
বিস্ফোরণে অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলসহ অন্তত ২০টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ধসে গেছে বেশ কিছু ঘরবাড়ির দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। আশপাশের পাঁচতলা ভবনগুলোর জানালার কাঁচ, এসি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য ও দোকানপাট ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অর্ধশতাধিক ঘরবাড়িও বিস্ফোরণের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তে তারা জানায়, ট্যাংকের ভেতরে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হওয়ায় বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে।
রংপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক বাদশা মাসউদ আলম বলেন, 'আজাদ এলপিজি পাম্পে বিস্ফোরণের পর আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। এলাকা জুড়ে ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে আছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নির্ধারণ করা যায়নি।'
এ ঘটনায় রংপুর মহানগর কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, বিস্ফোরণে তেল সংরক্ষণাগারের ট্যাংক ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। পাম্পে থাকা প্রায় ১৫টি প্রাইভেটকার মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহতদের রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে এবং সাধারণ মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয় যান চলাচল।
রংপুর সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গ্যাস স্টেশনের লাইসেন্স, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ নীতিমালা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে এলাকায় এখনও সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।