নারী আসন ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের পদ্ধতি নির্ধারণে ঐকমত্য হয়নি: আলী রীয়াজ

সংসদে নারী আসন ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের পদ্ধতি নির্ধারণে এখনো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পূর্ণ ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
আজ রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৩তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।
আলী রীয়াজ বলেন, সমাজে যেসব বৈচিত্র্য রয়েছে, তার যথাযথ প্রতিনিধিত্ব করতে আমাদের দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু, কী পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন হবে, সে ব্যাপারে ঐকমত্য হচ্ছে না।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে কমিশন থেকে দুটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনায় কিছু কিছু প্রস্তাব এসেছে। এসব প্রস্তাব নিয়ে আরো আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
সংসদে নারীদের জন্য স্থায়ীভাবে ১০০ আসন করার ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন উল্লেখ করে কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, এক্ষেত্রেও পদ্ধতিগত প্রশ্ন এখনো রয়ে গেছে। যার ফলে এ পদ্ধতি নির্ধারণে আমরা এখনো একমতের জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি।
তিনি জানান, বিদ্যমান ব্যবস্থায় আসন সংখ্যার সংখ্যানুপাতে ৫০ আসনকে ১০০ আসনে উপনীত করা বা সরাসরি নারী আসনে নির্বাচন- কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত এই দুই প্রস্তাবে একমত না হওয়ায় বিগত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন থেকে বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবটি হলো, সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের প্রয়োজনীয় সংশোধন করে ভিন্নভাবে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে যেসব রাজনৈতিক দল ২৫টির বেশি আসনে প্রার্থী দেয়, তাদের মধ্যে থেকে ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রার্থী নিশ্চিত করা।
আলী রীয়াজ বলেন, এ প্রস্তাবের বাইরেও আলোচনায় আরো কিছু প্রস্তাব এসেছে। তাই বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য কমিশন আলোচনা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আজ আলোচনায় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
অমীমাংসিত বিষয়ে ঐকমত্য গঠন করতে আগামীকাল সকালে আবারো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে কমিশন।