সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠনের আহ্বান বিশিষ্ট ৬০ নাগরিকের

বিভিন্ন পেশার ৬০ জন বিশিষ্ট নাগরিক বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে তারা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ভিত্তিক একটি উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়ে একমত হন। তারা মনে করছেন, এটি জবাবদিহিতা ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
জুলাই বিদ্রোহ-এর প্রথম বার্ষিকীর আগে প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে অর্থনীতিবিদ, আইনজীবী, শিক্ষক, অধিকারকর্মী ও উদ্যোক্তাসহ স্বাক্ষরকারীরা ন্যাশনাল কনসেনসাস কমিশন-এর অধীনে চলমান সংস্কার আলোচনাকে দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন। তারা উল্লেখ করেছেন, ১০০ সদস্যের একটি উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়ে সবাই একমত হলেও এর সদস্য নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে এখনো মতবিরোধ রয়েছে।
এমন একটি পিআর-ভিত্তিক উচ্চকক্ষ গঠিত হলে ছোট দলগুলোর জন্য রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি সহজ হবে, যেসব দল উল্লেখযোগ্য ভোট পেলেও বর্তমান ব্যবস্থায় সংসদে আসন পায় না। এর ফলে শাসন ব্যবস্থায় সঠিক ভারসাম্য ও নজরদারি নিশ্চিত হবে এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনের ঝুঁকি কমবে বলে তারা মনে করেন।
তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, কেবল নিম্নকক্ষের বর্তমান আসন বণ্টন পদ্ধতিকে অনুকরণ করলে কোন গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসবে না। তাদের মতে, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ভিত্তিক একটি উচ্চকক্ষ গঠনই পারে অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটি নিরাপত্তাবলয় হিসেবে কাজ করতে এবং সংলাপ ও সহযোগিতার নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে।
বিবৃতির শেষাংশে ন্যাশনাল কনসেনসাস কমিশন-এর প্রচেষ্টার প্রতি আশাবাদ প্রকাশ করা হয়েছে এবং রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে পিআর মডেলটি গ্রহণ করে আসন্ন 'জুলাই চার্টার'-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা জুলাই বিদ্রোহ-এর চেতনাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে প্রণীত হচ্ছে।
স্বাক্ষরকারীরা হলেন – মানবাধিকারকর্মী আইরিন খান, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, শিক্ষক ও রাজনৈতিক গবেষক আসিফ মোহাম্মদ শাহান, আইনজীবী মনজুর আল মতিন, উদ্যোক্তা ও সংগঠক ফাহিম মাশরুর, অর্থনীতিবিদ জ্যোতি রহমান, অর্থনীতিবিদ জিয়া হাসান, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠক ফারাহ কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. রুশাদ ফারিদী, শিক্ষানেত্রী উমামা ফাতেমা, সাংবাদিক আশরাফ কাইসার, আইনজীবী ব্যারিস্টার মিতি ফারজানা, অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক ড. অতনু রাব্বানি, প্রকাশক মাহরুখ মোহিউদ্দিন, উন্নয়ন গবেষক ড. ইমরান মাতিন, সমাজ বিশ্লেষক ড. মির্জা হাসান, অর্থনীতিবিদ ও নীতিগবেষক ড. অনন্যা রাইহান, সম্পাদক ও লেখক জাফর সোবহান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক শফিকুল রহমান, সম্পাদক (জাবান) রেজাউল করিম রনি, চিকিৎসক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. রুমি আহমেদ, স্বপতি আমিনুল ইসলাম ইমন, চিকিৎসা গবেষক শাহেদ ইকবাল, আইনজীবী এহতেশামুল হক, আইনজীবী ব্যারিস্টার মুশতাক আহমেদ, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ হাসিবুদ্দিন হোসেন, লেখক ও প্রকৌশলী সুবাইল বিন আলম, উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ ইসলামুল হক, গবেষক ও শিক্ষক সেলিনা আজিজ, শিক্ষাবিদ ও গবেষক সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, গবেষক আসিফ বিন আলী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক রন্টি চৌধুরী, আইনজীবী সাইফ শাহ মোহাম্মদ, আইনজীবী মাসুদ রানা, শিক্ষানেত্রী নাজিফা জান্নাত, সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী সাদিক মাহবুব ইসলাম, আইটি উদ্যোক্তা আহমাদ ইসলাম মুক্তসিত, প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন, উদ্যোক্তা কাইসার চৌধুরী, আইনজ্ঞ ও লেখক মিল্লাত হোসেন, বিনিয়োগ উপদেষ্টা মোহাম্মদ মিয়া রাদ, নাবিক ক্যাপ্টেন এ. কে. এম. মোতাহারুল ইসলাম, প্রযুক্তি লেখক রাকিবুল হাসান, উন্নয়ন গবেষক রুবায়েত সরোয়ার, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অধ্যাপক নাঈম মোহাইমেন, উদ্যোক্তা প্রকাশ চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ গালিব ইবনে আনোয়ারুল আজিম, উদ্যোক্তা দিদার ভূঁইয়া, আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ, উদ্যোক্তা মাহবুব সাদিক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ খালেদ শফিউল্লাহ, আইন ও সংবিধান গবেষক তারিকুল ইসলাম অনিক, প্রকৌশলী রনি মন্ডল, উদ্যোক্তা হাসান মাহমুদ, উদ্যোক্তা সৈয়দ আমিন, প্রকৌশলী মাহমুদুল খান আপেল, প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম সরকার, উদ্যোক্তা তারেক হোসেন এবং অর্থনীতি গবেষক ও অধিকারকর্মী হুমায়ুন কবীর।