শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানি ২ জুলাই

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগের নেতা শাকিল আলম বুলবুলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানি আগামী ২ জুলাই নির্ধারণ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও অ্যামিকাস কিউরি (অর্থাৎ আদালতের বন্ধু) এ ওয়াই মশিউজ্জামানের সময় চেয়ে করা আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বুধবার শুনানির জন্য এই দিন ধার্য করেন।
এদিকে, আদালত অবমাননার এই মামলায় শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবীর দায়িত্ব থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন অ্যাডভোকেট আমিনুল গনি টিটু।
তিনি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনাকে নিয়ে ফেসবুক একটি পোস্ট দিয়েছিলেন, যার কারণে তার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা নৈতিক ও পেশাগত দৃষ্টিকোণ থেকে 'কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট' হিসেবে বিবেচিত হয়।
ট্রাইব্যুনাল তার পরিবর্তে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাডভোকেট আমির হোসেনকে নতুন আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অন্যরা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।
গত ৫ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও ভাইরাল হয়। সেখানে শেখ হাসিনার কণ্ঠে বলতে শোনা যায় হয়, 'আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি।'
পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অডিওটির ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে সত্যতা নিশ্চিত করে।
এরপর ওই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে প্রসিকিউশন।
সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে ১৫ মে'র মধ্যে জবাব দাখিলের নির্দেশ দেয়। তবে নির্ধারিত সময়ে জবাব না দেওয়ায় অভিযুক্তদের ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেদিনও তারা হাজির না হওয়ায় আদালত প্রসিকিউশনের আবেদনের ভিত্তিতে শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বহুল প্রচারিত দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর নির্দেশ অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) এ এস এম রুহুল ইমরান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটি ২৬ মে 'যুগান্তর' ও 'নিউ এজ' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এতে অভিযুক্তদের ৩ জুন সকাল ১০টায় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা বা জবাব দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যথায় তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্যক্রম চলবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরেও শেখ হাসিনা ও অপর অভিযুক্ত ট্রাইব্যুনালে হাজির হননি। ফলে বিচারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গত ১৯ জুন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী (স্টেট ডিফেন্স কাউন্সেল) হিসেবে অ্যাডভোকেট আমিনুল গনি টিটুকে নিয়োগ দেওয়া হয়।