চট্টগ্রামে ৩ করোনা রোগী শনাক্ত, আক্রান্তদের চিকিৎসায় প্রস্তুত করা হয়েছে হাসপাতাল

করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় চট্টগ্রাম নগরীর দুটি হাসপাতালকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। হাসপাতাল দুটি হলো চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালিত মেমন হাসপাতাল-২। পাশাপাশি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পৃথক ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হচ্ছে।
বুধবার (১১ জুন) দুপুরে নগরীর টাইগারপাসে সিটি করপোরেশনের সম্মেলনকক্ষে এক জরুরি প্রস্তুতি সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। উপস্থিত ছিলেন চমেক হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন প্রতিনিধিরা।
সভা শেষে জানানো হয়, চট্টগ্রামে তিনজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। চলতি বছরে এবারই প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হলো। তবে সর্বশেষ কবে করোনা রোগী শনাক্ত হয়, সে তথ্য জানাতে পারেনি সিভিল সার্জন কার্যালয়।
মেয়র শাহাদাত হোসেন জানান, চট্টগ্রামে চারটি ল্যাবে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব ল্যাব হলো চমেক হাসপাতাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি। এ ছাড়া সিটি করপোরেশন একটি সার্ভিস সেন্টার চালু করবে, যেখানে সাধারণ মানুষ করোনা বিষয়ে তথ্য ও সহায়তা পাবেন।
তিনি বলেন, 'করোনা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা এখন অনেক বেশি অভিজ্ঞ। আগের অভিজ্ঞতার আলোকে এবারও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি আগের মতোভাবেই মোকাবিলা করা হবে।'
মেয়র জানান, নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে জনবল ও যন্ত্রপাতির ঘাটতি রয়েছে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে। ঘাটতি থাকলে তা পূরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, 'প্রয়োজনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসক-নার্স এনে ঘাটতি পূরণ করা হবে। হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হবে। জনবল নিয়োগে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেছি।'
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, 'হাসপাতালে আগেই করোনা রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড ছিল, যা পরে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হয়। এখন সেটি আবার করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হচ্ছে। এখানে ৫০টি সাধারণ শয্যা ও ১০টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। ওয়ার্ডটি সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।'
তিনি জানান, করোনা পরীক্ষার জন্য পাঁচ হাজার কিট চাওয়া হয়েছে, যা এক-দুই দিনের মধ্যে পৌঁছাবে। নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষায় উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য সহকারীদের চমেকে আনার প্রক্রিয়া চলছে। চিকিৎসক ও নার্সও নিয়োজিত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'বর্তমানে ৮০ হাজার ভ্যাকসিন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে।'
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আকরাম হোসেন বলেন, 'হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য ১৫টি সাধারণ শয্যা ও ৫টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। অক্সিজেন সরবরাহের পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা আছে। যন্ত্রপাতির ঘাটতি দ্রুত দূর করা হবে।'
সভায় আরও বক্তব্য দেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক অং সুই প্রু মারমা, সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. ইমাম হোসেন প্রমুখ।