পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান ঢাকার

অবৈধ আর্থিক প্রবাহ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী বলেন, 'চুরি হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি অপরিহার্য। এটি বিচার, সমতা এবং আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় আস্থার বিষয়।'
গতকাল মঙ্গলবার (২৭ মে) নিউইয়র্কে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের কমিটির ২২তম অধিবেশনের সাধারণ আলোচনায় তিনি আরও বলেন, 'দক্ষিণের উন্নয়ন অর্জনগুলো অবৈধ সম্পদ প্রবাহের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।'
এদিকে জি৭৭ ও চীন এবং এলডিসি গ্রুপের দেওয়া বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির প্রশাসক আখিম স্টেইনারকে দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতায় অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী।
রাষ্ট্রদূত বলেন, 'নিশ্চিতভাবেই আমরা একাধিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছি, যার অনেকগুলো গ্লোবাল সাউথের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। দক্ষিণের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ এখন ধীরে ধীরে উত্তরের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এই সম্ভাবনা আরও বৃদ্ধির জন্য কিছু কাঠামোগত সহায়তা প্রয়োজন।'
রাষ্ট্রদূত স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের জন্য প্রক্রিয়াধীন দেশসমূহের জন্য বর্তমানে বিদ্যমান বিশেষ সুবিধাগুলো দীর্ঘায়িত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, এ সুবিধাগুলো আকস্মিকভাবে প্রত্যাহার না করে ধাপে ধাপে তুলে নেওয়া উচিত, যাতে উত্তরণ প্রক্রিয়া টেকসই ও অপরিবর্তনীয় হয়।
তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোর নিজস্ব সম্পদ আহরণ এবং গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে 'সোশ্যাল বিজনেস' বা সামাজিক উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা এবং নবায়নযোগ্য শক্তির মতো খাতে এই ধরনের উদ্যোগ ইতিবাচক ও গুণগত পরিবর্তন আনতে সক্ষম।
যুবসমাজকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রধানতম শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তরুণদেরকে উন্নয়ন কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি তারুণ্যের সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগাতে শিক্ষা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ প্রযুক্তিখাতে দক্ষতা অর্জনে অধিকতর বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃসহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি ন্যায়সংগত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক 'তিন শূন্যের' বিশ্ব গঠনের প্রতি বাংলাদেশের পরিপূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের এই স্থায়ী প্রতিনিধি।