পল্লবীতে মেট্রো স্টেশনের নিচে ফোন ছিনতাই: পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ ভুক্তভোগীর

রাজধানীর পল্লবীতে মেট্রো স্টেশনের নিচে ফুটপাতে ধারালো অস্ত্রের মুখে মুঠোফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আল-আমিন রানা।
তিনি বলছেন, ঘটনার পর পল্লবী থানায় একাধিকবার যোগাযোগ করেও তিনি কোনো সহায়তা পাননি। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ তারা পেয়েছেন এবং ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
আল-আমিন রানা রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। থাকেন পল্লবী এলাকায়। অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে তিনি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন।
এ বিষয়ে আল-আমিন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, ছিনতাইকারীরা ধারালো অস্ত্রের মুখে তার হাতে থাকা আইফোন ছিনিয়ে নেন। ছিনতাইকারীরা তার হাতে ও পায়ে সেই অস্ত্র দিয়ে আঘাতও করে। মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার পর তিনি ছিনতাইকারীদের পেছন পেছন দৌড়েও গিয়েছিলেন। কিন্তু ছিনতাইকারীরা অটোরিকশায় করে পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, 'ঘটনার পর রাতেই আমি পল্লবী থানায় লিখিত অভিযোগ করি। থানা থেকে একজন উপপরিদর্শকের (এসআই) ফোন নম্বর দেওয়া হয়। বলা হয়, এই এসআই ঘটনাটি তদন্ত করবেন। আমি রাত দুইটা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে অবস্থান করি, কিন্তু কেউই আসেনি।'
তিনি আরও বলেন, 'গতকাল রোববার সকালে ফের থানায় যোগাযোগ করলে ডিউটি অফিসার নতুন করে অভিযোগ দিতে বলেন, কিন্তু আমি করিনি। পরে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশকে দেখানোর পরও তারা কোনো রেসপন্স পাইনি।'
আল-আমিন জানান, সিসিটিভিতে ধারণ করা ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ নিজে থেকে যোগাযোগ করে। আজ সকালে এক এসআই তাকে বলেছিলেন যে তিনি ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন।
থানা থেকে আল-আমিনকে যেই এসআইয়ের নম্বর দেওয়া হয়েছিল, তার নাম জয় দাশ। অসহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি টিবিএসকে বলেন, 'ওইদিন রাতে আমি ঘটনাস্থলে এসেছিলাম। কিন্তু ভুক্তভোগী ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তাছাড়া গতকালও তার সঙ্গে কথা বলেছি। আজ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি।'
'পল্লবী এলাকাটি খুবই জনবহুল। এখানে ৩৯টি ক্যাম্প ও কয়েকটি বস্তি রয়েছে। সেই তুলনায় আমরা পুলিশ কম। তারপরেও আমরা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি', যোগ করেন তিনি।
জানতে চাইলে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম বলেন, তিনি গতকালই এই থানায় যোগ দিয়েছেন। ঘটনাটির বিষয়টি আজই সাংবাদিকদের মাধ্যমে শুনেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, আল-আমিন হাতে ফোন নিয়ে মেট্রো স্টেশনের নিচের সড়কের ফুটপাত ধরে হেঁটে যাচ্ছেন। এ সময় এক যুবক পাশ কাটিয়ে তার আগে চলে যান। মুহূর্তেই পেছন থেকে আরও দুই যুবক এসে তিনজন মিলে আল-আমিনের পথরোধ করেন। তারা আল-আমিনের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি করে তার মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন।
এ সময় ছিনতাইকারীদের একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাতও করেন। তারপর তিনজনই দৌড়ে একটি অটোরিকশায় উঠে পালিয়ে যান। আল-আমিনকেও তাদের পেছনে দৌড়াতে দেখা যায়।