‘এটা কি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিতর্কিত করার কোনো পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র?’: শফিকুল আলম

শিল্পাঞ্চলে গ্যাস সংকটকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে তুলনা করেছেন বস্ত্র প্রস্তুতকারকদের সংগঠন বিটিএমএ-এর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল। তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আজ সোমবার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে এ নিন্দা জানিয়ে পোস্ট দেন শফিকুল আলম।
এমন বক্তব্য শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি চরম অসম্মান উল্লেখ করে তিনি বলেন, "এই তুলনা শুধু ইতিহাস বিকৃতিই নয়, বরং যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগের প্রতি চরম অবমাননাকর।"
প্রেস সচিব শফিকুল আলমের পোস্টটি পোস্টটি টিবিএসের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:
'আমি বস্ত্র প্রস্তুতকারকদের সংগঠন বিটিএমএ-র সভাপতি শওকত আজিজ রাসেলের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তিনি শিল্পাঞ্চলের বর্তমান গ্যাস সংকটকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে তুলনা করেছেন। এই তুলনা শুধু ইতিহাস বিকৃতিই নয়, বরং যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগের প্রতি চরম অবমাননাকর।'
'নিঃসন্দেহে, চলমান গ্যাস সংকট শিল্প কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। তবে এই পরিস্থিতিকে ১৯৭১ সালের নৃশংসতার সঙ্গে তুলনা করা যায় না। একটি ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। চ্যালেঞ্জ এখনও রয়েছে।'
'কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম চার মাসে শিল্পখাতে গ্যাস সরবরাহ আগের বছরের তুলনায় ২১ শতাংশ বেড়েছে। শুধু এপ্রিল মাসেই গ্যাস সরবরাহ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি ছিল। চলতি মাসের শুরুতে সরকার আরও চারটি এলএনজি কার্গো আমদানির পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে এবং শিল্পখাতে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে বিদ্যুৎ খাত থেকে গ্যাস সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'
'বিটিএমএ সভাপতির মন্তব্যে আমি বিস্মিত ও মর্মাহত। এটা কি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিতর্কিত করার জন্য কোনো পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ?'
'শিল্প নেতাদের উচিত দায়িত্বশীল ও গঠনমূলকভাবে তাদের সমস্যার কথা উপস্থাপন করা। উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য শুধু তাদের উদ্বেগের গুরুত্বকেই খাটো করে না, বরং সংকট নিরসনের জন্য প্রয়োজনীয় সম্মিলিত প্রচেষ্টাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।'