সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিরাপত্তা জোরদারে সাত দফা সিদ্ধান্ত: উপদেষ্টা আসিফ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে সাত দফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (১৪ মে) এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
তিনি জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে 'এক আতঙ্কের স্থান থেকে নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক স্থানে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে'।
ঢাবি প্রশাসন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে হওয়া সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো:
- রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেটটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
- উদ্যানে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ, মাদক ব্যবসা বন্ধ এবং পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন, ডিএমপি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান চালানো হবে।
- নিয়মিত অভিযান ও মনিটরিংয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের [অংশীজন] নিয়ে একটি কমিটি গঠন করবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
- উদ্যানে পর্যাপ্ত আলো ও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো এবং সেগুলোর নিয়মিত মনিটরিং নিশ্চিত করা হবে।
- সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি ডেডিকেটেড পুলিশ বক্স স্থাপন করা হবে।
- রমনা পার্কের আদলে উদ্যানে সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা চালু করা হবে।
- রাত ৮টার পর সাধারণ মানুষের উদ্যানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে।
এই প্রক্রিয়ায় সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে জানিয়ে উপদেষ্টা আসিফ বলেন, সিদ্ধান্তগুলো অবিলম্বে বাস্তবায়নের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, সোমবার (১৩ মে) রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন রমনা কালীমন্দিরের সামনে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫)।
শাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মনসুর জানান, সাম্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হলের ২২২ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। পাশাপাশি ছাত্রদলের ওই হল শাখার সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
পুলিশের তথ্যানুযায়ী, ঘটনার সময় সাম্য তার বন্ধু আশরাফুল আলম রাফি ও মো. আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদের সঙ্গে মোটরসাইকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন।
পথে রমনা কালীমন্দিরের উত্তর পাশে বটগাছের কাছে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত তাদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা সাম্য ও তার বন্ধুদের মারধর করে। পরে এক ব্যক্তি সাম্যের ডান পায়ের উরুতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে পালিয়ে যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় সহপাঠীরা সাম্যকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।