গাজীপুরে ৩ পোশাক কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভ, একটি বন্ধ ঘোষণা

গাজীপুর মহানগরীর তিন সড়ক ও কাশিমপুর এলাকায় পৃথক দাবিতে তিনটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা আজ রোববার সকালে বিক্ষোভ করেছে। এর মধ্যে একটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ।
কারখানার শ্রমিক ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের সুরাবাড়ি এলাকার মার্ক সোয়েটার লিমিটেড নামের একটি পোশাক তৈরির কারখানা রয়েছে। কারখানায় কর্মরত শ্রমিকেরা বকেয়া বেতন ও কাজের দর বৃদ্ধিসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে কয়েকদিন ধরে কারখানার ভেতরে আন্দোলন করছিল।
এ অবস্থায় আজ সকালে শ্রমিকেরা কারখানা গেটে গিয়ে অনির্দিষ্টকালের বন্ধের নোটিশ দেখতে পান। নোটিশ দেখে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ ঘটনার পর থেকে কারখানা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
কারখানা বন্ধের নোটিশে বলা হয়েছে, চলমান বেআইনি ধর্মঘট ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী ১১ মে থেকে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য ঘোষণা করা হলো।

আরো বলা হয়, নিরাপত্তা প্রহরী এবং প্রশাসনিক কাজে নিযোজিত ব্যক্তিরা এই নোটিশের আওতামুক্ত থাকবে। কারখানা খোলার অনুকুল পরিবেশ তৈরি হলে নোটিশের মাধ্যমে কারখানা খোলার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।
কারখানার শ্রমিকরা জানান, কাজের দর বৃদ্ধির জন্য তারা কয়েকদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। আজ শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে কাজের দর প্রকাশ করার কথা থাকলেও সকালে মালিকপক্ষ কারখানার গেটে অনির্দিষ্টকালের বন্ধের নোটিশ দিয়েছে। এ সময় তারা কারখানা খুলে দেওয়ার জন্য বিক্ষোভ করেন।
কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, কাজের রেট বৃদ্ধি, এক কর্মকর্তার অপসারণসহ বেশ কিছু দাবিতে কয়েকদিন ধরেই শ্রমিকেরা আন্দোলন করে আসছিলেন। যে কারণে কর্তৃপক্ষ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। আজ সকালে কারখানার সামনে বিক্ষোভ করেন। তবে পরিবেশ শান্ত রয়েছে।
অপরদিকে, গাজীপুর মহানগরীর সদর মেট্রো থানাধীন তিন সড়ক এলাকায় দুটি কারখানার ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকেরা তাদের ১৪ মাসের বকেয়া বেতন ও পাওনাদি পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।
পুলিশ ও শ্রমিকেরা জানান, গাজীপুর মহানগরীর সদর মেট্রো থানাধীন তিন সড়ক এলাকায় একই মালিকানাধীন স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড ও ইয়াং ওয়ানস বিডি নামের দুটি কারখানা রয়েছে। কারখানা দুটিতে ২০২৩ সালে নানা দাবিতে শ্রমিক আন্দোলন হলে কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকজন শ্রমিককে ছাঁটাই করে।
এসব শ্রমিকের ১৪ মাসের বেতন পাওনা রয়েছে। গত ঈদে কয়েকজন শ্রমিককে ২০ হাজার টাকা করে পরিশোধ করা হয়েছিল। চলতি মাসের ৭ তারিখ বাকি শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু শ্রমিকরা তিন দিন অপেক্ষা করে পাওনা না পেয়ে আজ সকালে কারখানার সামনে যান।
এ সময় তাদের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর কারখানা দুটির ছাটাঁইকৃত শ্রমিকেরা তাদের ১৪ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানান, তিন সড়ক এলাকার কারখানা দুটির ২০২৩ সালে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকেরা তাদের পাওনার জন্য বিক্ষোভ করছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।