‘মানবিক করিডোর নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য প্রিম্যাচিউর’: শফিকুল আলম

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কক্সবাজার দিয়ে প্রস্তাবিত মানবিক করিডোর নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্যকে 'প্রিম্যাচিউর' [অকালপক্ব] বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আজ শুক্রবার (২ মে) বিকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, 'মানবিক করিডোর স্থাপন সংক্রান্ত এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি এটি হয়, তাহলে তা জাতিসংঘের উদ্যোগে এবং তত্ত্বাবধানে হবে। জাতিসংঘ বাংলাদেশ ও মিয়ানমার—দুই দেশের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে। পাশাপাশি রাখাইনের অন্যান্য পক্ষের সঙ্গেও কথা বলা হবে।'
শফিকুল আলম বলেন, 'রাখাইনে দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত চলছে। সেখানে বিভিন্ন গ্রুপ আছে, রোহিঙ্গারা আছে। মানবিক সহায়তার একমাত্র মাধ্যম বাংলাদেশ। আর দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
মানবিক করিডোর কিংবা রোহিঙ্গা ইস্যুতে আওয়ামী লীগের কোনো বক্তব্যের অধিকার নেই বলেও মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ ভয়ে 'রোহিঙ্গা' শব্দটি পর্যন্ত উচ্চারণ করত না। তারা রোহিঙ্গাদের 'এফডিএমএন' বলে উল্লেখ করত। আপনি যখন 'রোহিঙ্গা' বলবেন, তখন তারা রাখাইনের অধিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পায়। তারাতো রোহিঙ্গা, আমাদের আত্মীয়ও নয়।'
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, গত কয়েক মাসে এক লাখ ১০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে—এই তথ্যটি বিভ্রান্তিকর। তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাখাইনে যুদ্ধ শুরু হলে তখন থেকেই অনুপ্রবেশ চলছে। এমনকি সে সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যরাও বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল। অনুপ্রবেশ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ওই সংখ্যাটি বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না।'
তিনি আরও জানান, 'প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনের জন্য এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা মিয়ানমারকে দেওয়া হয়েছে। তবে মিয়ানমার সরকার বলছে, এই তালিকায় কিছু তথ্যগত সমস্যা রয়েছে, যা তারা যাচাই-বাছাই করছে।'
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ এবং সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান উপস্থিত ছিলেন।