চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী আবিদ হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ১২ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাসে ২০১১ সালে ছাত্রদলকর্মী সন্দেহে বিডিএস তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবিদুর রহমান আবিদ হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ১২ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিচারিক আদালতের দেওয়া খালাসের রায়ও স্থগিত করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও সৈয়দ জাহেদ মনসুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে জারি করা রুলে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, বিচারিক আদালতের রায় কেন বাতিল করা হবে না।
আসামিরা হলেন—তৎকালীন ছাত্রসংসদের ভিপি মফিজুর রহমান জুম্মা, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল পারভেজ সুমন, সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার, সহ-সাধারণ সম্পাদক হিমেল চাকমা, ফেরদৌস রাসেল, শান্ত দেবনাথ, মাহাফুজুর রহমান ধীমান, নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দেবাশীষ চক্রবর্তী, মোস্তফা কামাল, রাশেদুর রেজা সানি ও সালমান মাহমুদ রাফসান।
আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অজি উল্লাহ ও আজিমুদ্দিন পাটোয়ারি। আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আহমেদ দাবি করেন, আবিদ তাদের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, আবিদসহ ছাত্রদলের আরও তিন কর্মী—ফয়সাল, নাজিম ও মাসুমকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পিটিয়ে আহত করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবিদের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা শেষে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সেলিম মো. জাহাঙ্গীর কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে ছাত্রসংসদ কার্যক্রম স্থগিত ও কলেজ ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়।
আবিদের স্বজনদের অভিযোগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের চেষ্টা করায় তাকে একাধিকবার পিটিয়েছিলেন ছাত্রলীগ নেতারা। এরপর তাকে বোনের বাসায় পাঠানো হয়। ২০১১ সালের ২১ অক্টোবর রাতে সেখানেই তিনি মারা যান। আবিদ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মধ্যম বড়ইতলী গ্রামের মৃত নুরুল কবির চৌধুরীর ছেলে।
ঘটনার পর আবিদের মামা নেয়ামত উল্লাহ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রসংসদের ২২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
২০১৯ সালের ১০ জুলাই চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী সব আসামিকে খালাস দেন। পরে বাদী হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন।