দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে চলছে 'শাটডাউন' কর্মসূচি

ছয় দফা দাবি আদায়ে দেশের পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটগুলোতে শাটডাউন কর্মসূচি চলছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।
সকালে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবন এবং প্রিন্সিপালের কার্যালয়ের প্রবেশপথে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। এ সময় তারা তাদের দাবির পক্ষে নানা স্লোগান দেন।
পরে দুপুর ১২টার দিকে ইনস্টিটিউটের শহীদ চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন 'কারিগরি ছাত্র আন্দোলন' নামক প্ল্যাটফর্মের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে শেরপুর পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের বিভাগীয় প্রতিনিধি শাহজাদা আহমেদ বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হলেও দাবিগুলো বাস্তবায়নে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়েই আমরা শাটডাউন কর্মসূচিতে গেছি। এই কর্মসূচির আওতায় সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই আমাদের আন্দোলন যেন সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ না হয়, তাই সকল কর্মসূচি ক্যাম্পাসের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
ঢাকা পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি জুবায়ের পাটোয়ারি বলেন, 'কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক গঠিত কমিটি আমাদের সবগুলো দাবি পূরণ করতে পারবে না। আমাদের কিছু দাবি শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টা বরাবর। ফলে আমরা চাই কারিগরি শিক্ষা সংস্কার গঠন করা হোক। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।'
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে ২০২১ সালের 'বিতর্কিত' ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগ বাতিল এবং ওই পদে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে ৩০ শতাংশ কোটা প্রথা বাতিল।
এছাড়া তারা ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে খোলা বয়সে ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ, দশম গ্রেডে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য পদ সংরক্ষণ, কারিগরি ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকা ব্যক্তিদের নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা এবং একটি আলাদা 'কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়' গঠনসহ 'কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন' এবং একটি উচ্চমানের কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।
বেশ কয়েক মাস ধরে ছয় দফা দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি করছেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। ছয় দফা দাবিতে এর আগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা সড়ক, মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
গত ১৬ এপ্রিল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. মোস্তাফিজুর রহমান খানকে পদ থেকে সরিয়ে তাকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।