শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাসেও অনশন প্রত্যাহার করেনি কুয়েট শিক্ষার্থীরা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করানোর জন্য কুয়েট ক্যাম্পাসে এসেছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার। তিনি অনশন প্রত্যাহার করার জন্য শিক্ষার্থীদের বারবার অনুরোধ করলেও, ভিসির পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
বুধবার সকালে ৯ টা ৪৫ থেকে সাড়ে ১০ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত উপদেষ্টা কুয়েত ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন।
এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, "তোমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতি শীঘ্রই তারা তোমাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তারপর তোমাদের দাবি জবানি আমরা যথারীতি ব্যবস্থা নিব। আইনগত তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই, কারণ তা আদালতে টিকেনা।"
তবে পালটা জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, "আমরা দুই মাস ধরে আন্দোলন করে আসছি। তবে আমাদের দাবি মানা হচ্ছে না। আমরা এই বিষয়ে আর সময় দিতে চাই না। আপনারা আপনাদের কাজ করতে থাকেন। আমরা লাশ হয়ে গেলেও ভিসির পদত্যাগ ছাড়া অনশন ভাঙ্গবো না।"
সোমবার বিকেল ৩ টায় তারা অনশন শুরু করেন। সেদিন ৩২ জন শিক্ষার্থীর অনশন শুরু করলে ইতোমধ্যে ৫ জন অসুস্থ হয়ে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া দুইজন বাড়িতে চলে গেছেন।
গত ১৪ এপ্রিল বিকেলে কুয়েটের ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল ও বহিরাগতদের হামলার পরও উপাচার্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। উলটো, হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আন্দোলনকারী ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে কুয়েটের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের পাবলিক রিলেশনস অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদুজ্জামান শেখ জানান, গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ঘটে যাওয়া দুঃখজনক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ৯৮ তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় গঠিত তদন্ত কমিটির গঠন করা হয়। তাদের দেওয়া প্রতিবেদন সিলগালা অবস্থায় সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করা হয়। ওই সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি, তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানো হয়। এছাড়া ২ মে থেকে আবাসিক হল খুলে দেওয়া ও ৪ মে ক্লাস শুরুর কথা জানানো হয়।