একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আহমদ শামসুল ইসলামের ইন্তেকাল

একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, গবেষক ও লেখক অধ্যাপক ড. আহমদ শামসুল ইসলাম ইন্তেকাল করেছেন। সোমবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে ইন্তেকাল করেন তিনি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। তিনি দুই পুত্র, এক কন্যা, ১৪ জন নাতি-নাতনিসহ বহু আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহী ও ছাত্রছাত্রী রেখে গেছেন।
তার জ্যেষ্ঠ পুত্র অধ্যাপক ড. ইউসুফ ইসলাম সাউথ-ইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য, একমাত্র কন্যা ড. জেবা ইসলাম ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশনের একজন অধ্যাপক এবং কনিষ্ঠ পুত্র ইঞ্জিনিয়ার খালিদ ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত।
অধ্যাপক ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০ বছরেরও অধিক সময় বোটানি (উদ্ভিদবিজ্ঞান) পড়িয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
গবেষণা জীবনে তিনি প্রথমবারের মতো দুটি বাণিজ্যিক পাট জাতের মধ্যে সফল সংকরায়ণ সম্পন্ন করেন। এছাড়াও, তিনি পাটের টিস্যু কালচার ও মাইক্রোপ্রপাগেশন কৌশল সফলভাবে প্রতিষ্ঠা করেন।
দেশীয় অর্কিড ও আলু থেকে ভাইরাসমুক্ত গাছ উৎপাদনের লক্ষ্যে সোমাক্লোনাল ভ্যারিয়েশন, মেরিস্টেম কালচার ও মাইক্রোপ্রপাগেশনসহ নানা টিস্যু কালচার কৌশল তিনি উন্নয়ন ও প্রয়োগ করেন।
তার উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে- প্রেসিডেন্ট'স গোল্ড মেডেল ইন অ্যাগ্রিকালচার (১৯৮৪), একুশে পদক (শিক্ষা, ১৯৮৬), বিএএস গোল্ড মেডেল ইন বায়োলজি (১৯৮৭), বাংলাদেশ বোটানি অ্যাসোসিয়েশন স্বর্ণপদক (১৯৯৭), জিএনওবিবি প্রদত্ত লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড (২০১৭)।
কুরআনের শিক্ষাকে কোমলমতি শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে তিনি ১৯৮০ সালে 'কুরআনিক স্কুল সোসাইটি' প্রতিষ্ঠা করেন।
তার রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- স্মৃতির পটে জীবন ছবি, রাইমস অব দ্য হার্ট, বংশগতিবিদ্যার মূলকথা ও জিন প্রকৌশল। বাংলাদেশের শিক্ষা ও গবেষণাক্ষেত্রে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।