ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চড়ক পূজা, শিবভক্তদের শারীরিক কসরত দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যতিক্রমী ধর্মীয় উৎসব চড়ক পূজা।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার কামরগাঁও ঋষিপাড়া মাঠে স্থানীয়দের উদ্যোগে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
পূজার মূল আকর্ষণ ছিল শিবভক্তদের বিভিন্ন শারীরিক কসরত, যা আন্দোলিত করে দর্শনার্থীদের। পিঠের উপর বড়শি গেথে চড়ক গাছে ঘুরানো, ধারালো লোহার দণ্ড এবং ধারালো দায়ের উপর শুয়ে দেখানো হয় আশ্চার্যজনক কসরত দেখান শিব ভক্তরা।

ব্যতিক্রমী এই পূজা দেখতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্ত-দর্শনার্থীরা এসে জড়ো হন নানা বয়সী মানুষ। এছাড়া পূজা উপলক্ষে মাঠের পাশে বসে লোকজ মেলা।
সনাতন ধর্মের অনুশাসন অনুযায়ী শিবের গাজন উৎসবের অংশ হিসেবে শতবছরেরো বেশি সময় ধরে এই চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। অপশক্তি থেকে নিজেদের রক্ষা করার পাশপাশি আত্মত্যাগের অংশ হিসেবে পিঠে বড়শি গেথে চড়ক গাছে ঘোরানো হয় কয়েকজন ভক্তকে। পাশপাশি মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লোহার সিক বিদ্ধ করে দেখানো হয় নানা কসরত। এছাড়া আগুনের ওপর দিয়েও হেঁটে যান অনায়াসে।

জেলার ফান্দাউক গ্রামের বাসিন্দা বিষ্ণুপদ ঋষি বলেন, 'ব্যতিক্রম এ পূজাটি আমাদের ভালো লাগে। বিশেষ করে পূজায় তান্ত্রিক শক্তির মাধ্যমে যেসব কসরত দেখানো হয়- সেটি অনেক বেশি আনন্দ দেয়। আমরা চাই ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে প্রতিবছর এ পূজা অনুষ্ঠিত হোক।'
সরাইলের বাসিন্দা সুনন্দা দে জানান, চড়ক পূজা বাঙালি সংস্কৃতিরই অংশ। তিনি ছোটবেলা থেকে এ পূজা দেখে আসছেন। এখন সন্তানদের নিয়ে এসেছেন পূজা দেখাতে।

সন্ন্যাসী দীপক রায় বলেন, 'মহাদেবের সান্বিধ্য পাওয়ার জন্যই আমরা চড়ক পূজা করি। মহাদেবের মন্ত্রের গুণে ভক্তদের শরীরে বড়শি গেথে ঘুরানে হয়, আগুনের ওপর দিয়ে হাঁটেন। আধ্যাত্মিক শক্তির পরীক্ষা হিসেবে শারীরিক এসব কসরত দেখানো হয়।'