চট্টগ্রামে জোড়া খুন: ‘ছোট সাজ্জাদের’ স্ত্রীসহ তিনজনকে ৭ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় জোড়া খুনের মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে 'ছোটো সাজ্জাদ'-এর স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্নাসহ তিনজনকে আগামী সাত দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
এ বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি শেষে আজ (১৩ এপ্রিল) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক।
তিনি বলেন, দুই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা মামলায় তামান্নাসহ তিনজনকে চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তিনি আরও বলেন, এ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আপিল করেন। আজ শুনানি শেষে আপিল বিভাগ তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
এর আগে, গত ১৫ মার্চ ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয় ছোটো সাজ্জাদকে। ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম শহরে একটি প্রাইভেট কারের ভেতর দুই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার দুই দিন পর ১ এপ্রিল এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ছোটো সাজ্জাদ এবং তার স্ত্রী শারমিন তামান্নাকে আসামি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ অঞ্চলের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মাহমুদুল হাসান মামুন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস) বলেন, নিহতদের মধ্যে একজন বখতিয়ার হোসেন মানিকের মা ফিরোজা বেগম বাকলিয়া থানায় মামলা করেছেন। মামলায় মোট সাতজন নাম উল্লেখ করে এবং আরও ছয় থেকে সাতজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, সারোয়ার হোসেন বাবলার গাড়ির চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন নিহত মানিক। আর সারোয়ারের ব্যক্তিগত কাজকর্ম করতেন নিহত আবদুল্লাহ।
গত ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে প্রাইভেটকারে করে নতুন ব্রিজ এলাকায় আড্ডা দিচ্ছিলেন মানিক, সারোয়ার, আবদুল্লাহসহ আরও কয়েকজন। নতুন ব্রিজ থেকে বাড়ি ফেরার জন্য বহদ্দারহাটের দিকে রওয়ানা হলে রাত ২টার দিকে রাজাখালী ব্রিজের ওপর পৌঁছামাত্র ৬-৭টি মোটরসাইকেল থেকে প্রাইভেটকার লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে দুর্বৃত্তরা। গুলিতে গাড়ির পেছনের গ্লাস ছিদ্র হয়ে যায়। তখন মানিক বহদ্দারহাটের দিকে না গিয়ে বাকলিয়া এক্সেস রোড দিয়ে চকবাজারের দিকে যায়।
পরে রাত সোয়া ২টার দিকে চকবাজার থানার নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কে মানিক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গাড়ি থামায়। গাড়ির পেছনে থাকা হাছান, ইমন, বোরহান, খোরশেদ ও রায়হানসহ অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জন তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি করে। গুলিতে মানিক ও আবদুল্লাহ জখম হয়। গাড়িতে থাকা সারোয়ার এবং ইমন কৌশলে নেমে যায়। এরপর গুলি ছুড়তে থাকা আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। মানিক ও আবদুল্লাহকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
সম্প্রতি সাজ্জাদ হোসেন গ্রেপ্তারের পরে তার স্ত্রী শারমীন আক্তার তামান্না আদালত ও প্রশাসন সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তার এই ভিডিও মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে তামান্নাকে বলতে শোনা যায়, 'আমরা কাড়ি কাড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।'