আলিফ হত্যাকাণ্ড: ১১ আসামির জামিন আবেদন খারিজ

চট্টগ্রামে সম্মিলিত সনাতনীর জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের সমর্থনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ১১ জনের জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) মাহমুদা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার হাসান এই আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন—প্রেম নন্দন দাস (১৯), রণব দাস (২৪), বিধান দাস (২৯), বিকাশ দাস (২৪), রুমিত দাস (৩০), রাজ কাপুর (৫৫), সমীর দাস (২৫), শিব কুমার দাস (২৩), ওম দাস (২৬), অজয় দাস (৩০) ও দেবী চরণ (৩৬)। তাদের ২৬ জানুয়ারি নগরীর কোতোয়ালি থানার ব্যান্ডেল রোডের সেবক কলোনি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিএমপির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এফআইআরে অভিযুক্ত ১১ জনই জামিন আবেদন করেন, যা শুনানি শেষে আদালত খারিজ করে দেন। মামলাটি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের ২৫ নভেম্বর। ওইদিন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আটক দেখানো হয়। তাকে চট্টগ্রামে আনা হয় এবং আদালতের শুনানির পরদিন কারাগারে পাঠানো হয়।
চিন্ময়ের সমর্থনে বিপুল সংখ্যক অনুসারী জড়ো হয়ে তাকে কারাগারে স্থানান্তরে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন, ফলে আদালত প্রাঙ্গণের বাইরে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। তারা প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে প্রিজন ভ্যান আটকে রাখেন, এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও বিজিবিসহ নিরাপত্তা বাহিনী লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে।
আদালত এলাকা থেকে শুরু হওয়া এই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে লালদীঘি ও কোতোয়ালি পর্যন্ত। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতি এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) সদস্য ও সংগঠনটির সমর্থকদের দায়ী করেছে।
আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন পরে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ড ও আশপাশের অস্থিরতার ঘটনাগুলোর তদন্ত চলমান রয়েছে।