কাদের-কামালসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারির নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘটিত গণহত্যা, হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং সাবেক পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনা পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এই ১০ জনকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) প্রতি নির্দেশনা চেয়ে বিভিন্ন সময় প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল। ট্রাইব্যুনাল সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে এবং পুলিশ সদর দপ্তরে আদেশ পাঠানো হয়েছে।
রেড নোটিশের আওতায় আসা বাকি আটজন হলেন—সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী একেএম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকী।
চিফ প্রসিকিউটর আরও জানান, চলতি বছরের জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় ২২টি মামলায় মোট ১৪১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকিদের মধ্যে ৮৭ জন এখনও পলাতক রয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালের সামগ্রিক পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত মোট ৩৩৯টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে ২২টি 'মিস কেস'-এ ১৪১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। পাশাপাশি ৩৯টি মামলার তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে।
মতবিনিময় সভার শুরুতে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে দেড় হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ২৫ হাজার ছাত্র-জনতা। এসব ঘটনার জলজ্যান্ত প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। আমরা ট্রাইব্যুনালে সেগুলো উপস্থাপন করে প্রমাণ করতে পারব।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম, গাজী এম এইচ তামিম, আবদুল্লাহ আল নোমান এবং সাইমুম রেজা।