১৩৩ প্রতিষ্ঠানকে ১৮,১৫০ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমোদন

১৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ১৮,১৫০ টন সুগন্ধি চাল বিদেশে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক পরিপত্রের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোকে সর্বনিম্ন ১০০ টন থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টন পরিমাণ চাল রপ্তানির অনুমোদন দেয়।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, এসব চাল আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রপ্তানি করতে হবে। প্রতি কেজি চালের রপ্তানি মূল্য হতে হবে কমপক্ষে ১.৬০ ডলার বা ১৯৫ টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।
এছাড়া বলা হয়েছে, প্রতিটি চালান জাহাজীকরণ শেষে রপ্তানিসংক্রান্ত সব কাগজপত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-২ শাখায় জমা দিতে হবে। পরবর্তী আবেদনের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী অনুমোদিত পরিমাণ থেকে প্রকৃত রপ্তানির তথ্য-প্রমাণাদিসহ আবেদন দাখিল করতে হবে। অনুমোদিত পরিমাণের বেশি চাল রপ্তানি করা যাবে না।
এই অনুমোদন কোনোভাবেই হস্তান্তরযোগ্য নয় এবং অনুমোদিত রপ্তানিকারক নিজে রপ্তানি না করে কোনোভাবে সাব-কন্ট্রাক্ট দিতে পারবেন না বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, "দেশে সুগন্ধি চালের উৎপাদন বেড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীরা রপ্তানির সুযোগ চেয়ে আসছিলেন। অনুমোদন না থাকায় সীমান্তবর্তী দেশে সুগন্ধি চাল পাচারের অভিযোগ ছিল। ফলে সরকার রপ্তানি আয়ের উৎস বাড়াতে ও রপ্তানি বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে এই অনুমোদন দিয়েছে।"
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে ১০ লাখ ২৩ হাজার টন সুগন্ধি চাল উৎপাদিত হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এই উৎপাদন ছিল ৫ লাখ ৭৯ হাজার টন। অর্থাৎ, গত সাত বছরে উৎপাদন বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে সুগন্ধি চালের চাহিদা বাড়ায় কৃষকেরা এর চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)-এর তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ৩৩ ধরনের সুগন্ধি ধানের চাষ হচ্ছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সুগন্ধি চাল রপ্তানি করে ২৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার আয় হয়েছিল। পরের বছর ২০২০-২১ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ২০ লাখ ৬০ হাজার ডলারে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এই আয় আরও কমে ১০ লাখ ৭০ হাজার ডলারে নেমে আসে। এরপর ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি স্থগিত রাখে।
ফলে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে গত জানুয়ারিতে সরকার আবার রপ্তানি অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর শতাধিক প্রতিষ্ঠান চাল রপ্তানির অনুমোদন চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। সেখান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, গাজীপুর, সিলেট, যশোর, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, পঞ্চগড় ও ফেনীর ১৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ১৮ হাজার ১৫০ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।