বিল্ডিং কোড উপেক্ষা করলে ভূমিকম্পে নগরগুলো বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে: আইপিডি

বাংলাদেশের বড়, মাঝারি ও ছোট শহরগুলো ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকলেও এসব নগর যথাযথ প্রস্তুতি নেয়নি বলে জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড ও মহাপরিকল্পনা অনুসরণ না করা হলে একটি বড় ভূমিকম্প মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) মিয়ানমারে সংঘটিত ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প এবং এর প্রভাব বাংলাদেশের বিভিন্ন নগরের অপ্রস্তুত অবস্থার বিষয়টি আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে। আইপিডি বলছে, গত কয়েক বছরে দেশে একাধিক ছোট ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, যা বড় ধরনের ভূমিকম্পের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিলেও কার্যকর প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি।
আইপিডি অন্তর্বর্তী সরকারকে এখনই যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে ভূমিকম্পের ঝুঁকি কমানো যায়।
সংস্থাটির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করলেও পরিকল্পিত নগরায়ন, টেকসই আবাসন ও ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে কোনো কমিশন গঠন করেনি।
আইপিডি আরও জানায়, যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের আশ্রয়ের জন্য এলাকাভিত্তিক পার্ক, খেলার মাঠ, উদ্যান ও উন্মুক্ত স্থান বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারি মহলে কোনো আলোচনা হচ্ছে না। অন্যদিকে, রাজউক এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনেকেই আবাসন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আঁতাত করে অনুমোদনহীন ভবন নির্মাণের সুযোগ দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাগরিক, পেশাজীবী ও পরিকল্পনাবিদদের পক্ষ থেকে এসব সমস্যা বারবার তুলে ধরা হলেও রাজউক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জনগণের নিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষা করছে বলে মন্তব্য করেছে আইপিডি। সংস্থাটি বলছে, ঢাকার ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনায় ভূতাত্ত্বিক গঠন ও গুণাগুণ বিবেচনায় নেওয়া উচিত। বর্তমানে রাজধানীর পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলসহ বন্যাপ্রবাহ এলাকা ও জলাশয় ভরাট করে অনুমোদনহীন আবাসিক প্রকল্প গড়ে উঠেছে, যেখানে ইতোমধ্যে অসংখ্য বহুতল ভবন নির্মিত হয়েছে। দুর্বল মাটির ওপর নির্মিত এসব ভবন ভূমিকম্পে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে।
ভূমিকম্পের প্রস্তুতি গ্রহণ ও ঝুঁকি কমাতে নগর পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা কমিশন গঠন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) বাস্তবায়নে বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি (বিবিআরএ) গঠন সহ দশটি সুপারিশ করেছে আইপিডি।