চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কাদায় আটকে পড়া হাতিটির শারীরিক অবস্থার অবনতি

গত ৫ মার্চ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কাদায় আটকে পড়া একটি হাতিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। এরপর থেকে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে নিবিড় পরিচর্যা ও চিকিৎসা দেয়ার ১৬ দিন পরেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এই অবস্থায়, হাতিটির বেঁচে ফেরার তেমন কোনও সম্ভাবনা না থাকলেও— হাল ছাড়তে নারাজ বন বিভাগের চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা দ্বীপান্বিতা ভট্টাচার্য জানান, 'গত ৫ মার্চ স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে জলদি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের গভীর বনে ঝিরির কাদায় আটকে পড়া বন্য হাতিটিকে উদ্ধার করা হয়। তবে আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী মা হাতিটি তারও বেশ কয়েকদিন আগে থেকে সেখানে আটকে থাকার কারণে খাবার ও পানির অভাবে অত্যন্ত দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। এতে সে উঠে দাঁড়ানোর শক্তি পর্যন্ত হারিয়ে ফেলে।'
তিনি বলেন, 'উদ্ধার করার পরদিন থেকে দোহাজারি সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জনের তত্ত্বাবধানে হাতিটির চিকিৎসা শুরু হয়। বন বিভাগের ১০-১২ জন কর্মী প্রতিদিন প্রায় চার কিলোমিটার পায়ে হেটে পাহাড় ঝিরি ডিঙিয়ে গভীর বনে গিয়ে হাতিটির পরিচর্যা করছে। তবে তার শারীরিক অবস্থার তেমন কোন উন্নতি লক্ষ করা যাচ্ছে না।'
দ্বীপান্বিতা আরো বলেন, 'হাতিটির ওজন ২ টনের বেশি। দুর্গম বনের গভীরে হওয়ায়— সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগও নেই। দিনের বেলায় যতটুকু সম্ভব চিকিৎসা ও সেবা দেয়া হচ্ছে। রাতে ওই এলাকায় বন্য হাতির বিচরণ থাকায় সেখানে থাকা নিরাপদ নয়। তারপরও হাতিটিকে সারিয়ে তুলতে বন বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'মাঝখানে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শে হাতিটিকে কপিকলের সাহায্যে তুলে দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হয়। এরপর থেকে অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। আগে যাও একটু নড়াচড়া করতো এখন তা কমে গেছে।'
হাতিটির চিকিৎসা তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ডা. জুলকারনাইন টিবিএসকে বলেন, 'উদ্ধারের পরদিন থেকে হাতিটিকে এন্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ড্রাগ দেয়া শুরু হয়। ১২ তারিখ পর্যন্ত তার শারিরীক অবস্থার উন্নতি হতে থাকে। তবে, একজন আন্তর্জাতিক হাতি বিশেষজ্ঞের পরামর্শে তাকে ড্রাগ দেয়া বন্ধ করার পর থেকে প্রাণীটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। আমরা বর্তমানে বিভিন্ন দেশের হাতি বিশেষজ্ঞদের সাথে যোগাযোগ করছি। তাদের পরামর্শ নিচ্ছি।'
তিনি বলেন, হাতিটি উঠে দাঁড়াতে না পারলেও এখনো খাবার খাচ্ছে। তবে শরীরে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়েছে। হাতিটিকে সারিয়ে তুলতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।