গাজীপুরে শ্রমিক আন্দোলনের মুখে সকালে কারখানা বন্ধ ঘোষণা, বিকেলে চালুর সিদ্ধান্ত

গাজীপুরে দুটি তৈরী পোশাক কারখানা শ্রমিকদের আন্দোলন ও ভাংচুর করার কারণে, রোববার সকালে বন্ধ ঘোষণার নোটিশ দেয়ার পর— বিকালে আবার সে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে মালিক পক্ষ। শ্রমিকরা আর আন্দোলন না করলে, সোমবার থেকে কারখানা দুটি চালু থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
শ্রমিক ও কারখানা সূত্রে জানা যায়,গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে এমটারনেট গ্রুপের মালিকানাধীন গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ ও ব্রাভো ম্যানুফ্যাকচারার লিমিটেড নামক দুটি তৈরী পোশাক কারখানা রয়েছে। কারখানা দুটির শ্রমিকরা তাদের অর্জিত বাৎসরিক ছুটির টাকা, ঈদ বোনাস, এক বছর চাকরী করা শ্রমিকদের চলতি মার্চ মাসের অগ্রিম অর্ধেক বেতন ও এক বছরের কম সময় চাকরী করা শ্রমিকদের বেতন চলতি মাসের ২৯ তারিখের মধ্যে পরিশোধের দাবি তোলে কয়েক হাজার শ্রমিক।
গত কয়েকদিন যাবত কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবিগুলো অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে দফায় দফায় শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। কিন্তু, দাবিগুলো মানা হয়নি। শ্রমিকরা গত শুক্রবার ও শনিবার দাবি আদায় করতে কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি পালন করে। শনিবার বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা কারখানার ভিতরে মেশিনপত্রে ভাংচুর চালায়। পরে বিকেলে কারখানা ছেড়ে চলে যায়।
সূত্র আরো জানায়, উল্লেখিত ঘটনার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ ও ব্রাভো ম্যানুফ্যাকচারার লিমিটেড কারখানার ফটকে নোটিশ ঝুলিয়ে বন্ধ ঘোষণা করে। রোববার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে এসে কারখানার প্রধান ফটকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখতে পায়। এতে শ্রমিকরা আবরো বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পরে তারা আবারো কারখানা বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে ও আগের দাবিদাওয়ার সমর্থনে আন্দোলন শুরু করে।
আজ রোববার সকাল থেকে কারখানা দুটির কয়েক হাজার শ্রমিক কারখানার সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। দুপুরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী, গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে। পরে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
কারখানাটির মানব সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস সুজন বলেন, 'শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে ভাঙচুর চালিয়েছে। তাই কর্মকর্তা কর্মচারীদের জানমাল রক্ষার জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেন নোটিশ ঝোলানো হয়েছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও শ্রমিকদের প্রতিনিধির সাথে আলোচনার পর শ্রমিকদের অধিকাংশ দাবি অযৌক্তিক হলেও মেনে নেয়া হয়েছে। শ্রমিকরা ফের অযৌক্তিক দাবি না জানালে সোমবার থেকে কারখানা চালু থাকবে।'
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) ইসমাইল হোসেন বলেন, 'শ্রমিক প্রতিনিধি, সেনাবাহিনী, কারখানা কতৃপক্ষ ও শিল্প পুলিশের সমন্বয়ে আলোচনা শেষে শ্রমিকদের দাবিগুলো মেনে নিয়েছে কারখানা মালিক। সোমবার থেকে কারখানা চালু থাকবে। শ্রমিকরাও কাজে যোগ দেবেন।'