চার দিনের সফরে ঢাকা পৌঁছেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস চার দিনের সফরে ঢাকা পৌঁছেছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
আগামীকাল শুক্রবার (১৪ মার্চ) জাতিসংঘ মহাসচিব ও অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন।
সকালেই তারা কক্সবাজার পৌঁছে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাদের স্বাগত জানাবেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক।
পরিদর্শনের অংশ হিসেবে গুতেরেস উখিয়ার আশ্রয়শিবিরের একটি ওয়াচ টাওয়ার থেকে ক্যাম্পের সার্বিক চিত্র পর্যবেক্ষণ করবেন এবং আশ্রয়শিবিরের পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিং গ্রহণ করবেন।
জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ক্যাম্পের চলমান সেবা কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপন করবে। বিশেষ করে, খাদ্য সহায়তা কমে আসা এবং খাদ্য সংকট নিয়ে আলোচনা হবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১৮) একটি লার্নিং সেন্টার, ইউএনএইচসিআর ও ডব্লিউএফপির সেবাকেন্দ্র ও ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র পরিদর্শন করবেন।
এছাড়া, তিনি রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতা, তরুণ ও নারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘ মহাসচিব ক্যাম্প-২০ এক্সটেনশনের হেলিপ্যাড এলাকায় লক্ষাধিক রোহিঙ্গার জন্য প্রধান উপদেষ্টা আয়োজিত ইফতার মাহফিলে যোগ দেবেন।
সফরটি রোহিঙ্গাদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। তারা মনে করছেন, এটি মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের দাবি জানানোর গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।
গুতেরেস এর আগেও রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছেন—সর্বশেষ ২০১৮ সালে তিনি সেখানে যান। তবে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে এটি মুহাম্মদ ইউনূসের প্রথম সফর।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, 'জাতিসংঘ মহাসচিবের সফরের খবর পেয়ে রোহিঙ্গারা উচ্ছ্বসিত। আমরা তার কাছে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে টেকসই প্রত্যাবাসন ও রাখাইনে নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার দাবি জানাব। পাশাপাশি, খাদ্য সহায়তা কমে যাওয়ার নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কেও আলোচনা করব।'
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, সফরকালীন ক্যাম্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সেনাবাহিনী তদারকি করছে। কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে শরণার্থী শিবির পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।
তিনি আরও জানান, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করবে এবং সফরকে ঘিরে বহিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।