সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের মামলায় তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে খালাস

সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ এই রায় দেন। রায়টি হাইকোর্টের পূর্ববর্তী রায়ের বিরুদ্ধে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের করা আপিল মঞ্জুর করার পর তাদের খালাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও আইনজীবী সাব্বির হামজা চৌধুরী। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আসিফ হাসান।
এর আগে, ১০ ডিসেম্বর গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিলের অনুমতি দিয়েছিল আপিল বিভাগ এবং একইসঙ্গে তার দণ্ড স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে মামুন আপিল করেন, এবং গত মঙ্গলবার এ আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়।
২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় এই মামলা দায়ের করে দুদক। এরপর ২০১০ সালের ৬ জুলাই তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
২০১১ সালের ৮ আগস্ট আদালত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন। মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়, যাদের মধ্যে চার্জশিটের বাইরের সাক্ষী হিসেবে ছিলেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) এজেন্ট ডেবরা লেপরোভেট।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য গিয়াস উদ্দিন আল মামুন নির্মাণ কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা নেন। এই অর্থ সিঙ্গাপুরে লেনদেন করা হয়।
পরবর্তীতে, মামুন ওই অর্থ সিঙ্গাপুরের ক্যাপিটাল স্ট্রিটের সিটি ব্যাংক এনএতে তার নামে থাকা ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। এই টাকার মধ্যে তারেক রহমান ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা খরচ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকা তৃতীয় বিশেষ জজ আদালত তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়ে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অর্থপাচার মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন। রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি মামুনকে ৪০ কোটি টাকা জরিমানা এবং পাচার করা ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৬১৩ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর দুদক আপিল করে, এবং ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি এই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি, গিয়াস উদ্দিন মামুনও আপিল করেন।
দুই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ২১ জুলাই হাইকোর্ট তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়ে ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেন এবং গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজা বহাল রাখেন। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের বেঞ্চ ওই রায় দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে গিয়াস উদ্দিন মামুন আপিল বিভাগে আবেদন করেন।