বিক্রি বাড়লেও এপ্রিল-সেপ্টেম্বরে বাটার ক্ষতি ২৪ কোটি টাকা
 
বহুজাতিক জুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাটা শু কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড দুই প্রান্তিকে ধারাবাহিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। পণ্যের বিক্রয় বাড়লেও, কার্যক্রমে বিঘ্ন এবং খরচ বৃদ্ধির কারণে প্রতিষ্ঠানটি এখনও আর্থিক চাপে রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বাটার ক্ষতি হয়েছে ১৪.৪৪ কোটি টাকা। আগের প্রান্তিকে ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৯.৬৪ কোটি টাকা। বিগত দুই প্রান্তিকে মোট ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ২৪ কোটি টাকায়।
ক্ষতির মধ্যেও পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৪৩ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এটি জানুয়ারি–সেপ্টেম্বর সময়কালীন আর্থিক কার্যক্রমের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়েছে। লভ্যাংশ বিতরণের রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ নভেম্বর। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, লভ্যাংশের অর্থ প্রান্তিক আয় এবং সংরক্ষিত আয়ের মাধ্যমে প্রদান করা হবে।
সেপ্টেম্বর শেষে বাটার সংরক্ষিত আয় দাঁড়িয়েছে ২৭৪.৯১ কোটি টাকায়। অন্যদিকে, মোট অন্তর্বর্তী লভ্যাংশের পরিমাণ হবে ১৯.৫৬ কোটি টাকা।
লভ্যাংশের ঘোষণার পরও আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাটার শেয়ারমূল্য সামান্য ০.৬২ শতাংশ কমে ৮৬৯ টাকায় বন্ধ হয়েছে।
বছরের প্রথম প্রান্তিকে বাটা ৩৬.৮৩ কোটি টাকার মুনাফা করেছে। এতে প্রথম নয় মাসে সামগ্রিক নিট মুনাফা ১২.৭৪ কোটি টাকায় বজায় রাখতে সহায়তা করেছে। তবে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) আশানুরূপ হয়নি। গত বছরের ১৭.৮১ টাকার তুলনায় এটি কমে ৯.৩২ টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা ৪৮ শতাংশ পতন নির্দেশ করে।
বাটা জানিয়েছে, জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আয় বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৮৩.৭৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। প্রথম নয় মাসে মোট আয় হয়েছে ৭০০ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় সামান্য বেশি।
প্রতিষ্ঠানটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'যদিও আয় সামান্য বেড়েছে, বিশেষ পরিস্থিতির কারণে নেট মুনাফা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'
বাটা আরও জানিয়েছে, 'কয়েকটি খুচরা দোকান ভাঙচুরের কারণে ক্ষতি হয়েছে, যা পরিচালনায় বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে এবং আর্থিক ফলাফলে বড় প্রভাব ফেলেছে। এই ঘটনা অভূতপূর্ব হলেও, এটি সংস্থার সহনশীলতা এবং শক্তিশালী অংশীদার সম্পর্কের প্রমাণ দেয়।'
বাটা ১৯৬২ সালে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে তারা রাজধানীর আশেপাশের টঙ্গী ও ধামরাইয়ে দুটি উৎপাদন ইউনিট পরিচালনা করছে, যার মিলিত দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ১.৬ লাখ জোড়া জুতা। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বছরে প্রায় ৩ কোটি জোড়া জুতা বিক্রি করা হয়।
বাটা বাংলাদেশ হলো নেদারল্যান্ডভিত্তিক বাফিন বিবি কোম্পানির সহযোগী প্রতিষ্ঠান। বাফিন বাটার শেয়ারের ৭০ শতাংশের মালিক। বাফিন গ্লোবাল বাটা শু অর্গানাইজেশনের একটি মূল কোম্পানি, যা বিশ্বের সব স্থানে বাটা ব্র্যান্ডের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

 
             
 
 
 
 
