জুন শেষে এনবিএফআই খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে ২৭,৫৪১ কোটি টাকা, মোট ঋণের ৩৬ শতাংশ
২০২৫ সালের জুন শেষে দেশের ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (এনবিএফআই) খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা, যা খাতটির বিতরণকৃত মোট ঋণের ৩৫. ৭২ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।
এর মাত্র তিন মাস আগে, অর্থাৎ মার্চ মাস শেষে, এ খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২৭ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা, যা ছিল মোট ঋণের ৩৫.৩২ শতাংশ। অর্থাৎ মাত্র এক প্রান্তিকের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৫২ কোটি টাকা।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৫ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকা বা মোট ঋণের ৩৩.২৫ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, এনবিএফআই খাতে সাম্প্রতিক সময়ে বকেয়া ঋণ বাড়লেও তার চেয়েও বেশি হারে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। অর্থাৎ আগের বিতরণ করা ঋণের সঙ্গে নতুন বিতরণ করা ঋণও এখন খেলাপি তালিকায় চলে যাচ্ছে।
বিষয়ে উত্তরা ফাইন্যান্স-এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, 'এনবিএফআই খাতে আগের যেসব ওভারডিউ [বিলম্বিত] ঋণ ছিল, সেগুলোই ধীরে ধীরে ক্লাসিফায়েড বা খেলাপি ঋণের তালিকায় ঢুকছে। নতুনভাবে তেমন ঋণ দেওয়া হচ্ছে না, তাই নতুন ঋণ থেকে খেলাপির হার হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।'
বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের তথ্য অনুযায়ী, ৩৫টি এনবিএফআইয়ের মধ্যে ১৯টির খেলাপি ঋণের হার ৫০ শতাংশের বেশি রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একই প্রান্তিকের ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্টে বলা হয়েছে, এ খাতের সম্পদের গুণগত মান ও লাভজনকতা আরও কমে গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, 'বিভিন্ন অনিয়মের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ফলে তারা নতুন করে আমানত সংগ্রহে ব্যর্থ হচ্ছে। পাশাপাশি পূর্ববর্তী সময়ে দীর্ঘ মেয়াদে রিশিডিউল করা ঋণগুলো এখন খেলাপিতে পরিণত হচ্ছে।'
