ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া কমায় ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদের হার ১০ শতাংশের নীচে

তিন মাসের ব্যবধানে ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার ২৪৬ বেসিস পয়েন্ট কমেছে। দুই বছরের মধ্যে এই প্রথমবার এই হার নেমে এসেছে ১০ শতাংশের নিচে।
গত বুধবারের নিলামে ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশে। তিন মাস আগেও এ হার ছিল ১২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ওইদিনের নিলামে ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি ট্রেজারি বন্ড বিক্রি হয়েছে।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের নীতি সুদের হার ১০ শতাংশেই অপরিবর্তিত রেখেছে।
ব্যাংকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, এ হ্রাসের পেছনে তিনটি প্রধান কারণ রয়েছে— ব্যাংক খাতে অতিরিক্ত তারল্য, নিলামের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় এবং সরকারের ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে কম ধার নেওয়া।
রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, 'নতুন বিনিয়োগ কম থাকায় ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকেও কম ঋণ নিচ্ছেন। ফলে ব্যাংক খাতে তারল্য বেড়েছে। নিলামের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার কেনা তারল্য আরও বাড়িয়েছে। একইসঙ্গে সরকার ট্রেজারি বন্ডের মাধ্যমে ঋণ নেওয়াও কমিয়েছে।'
বেসরকারি ব্যাংকের কয়েকজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিবিএসকে বলেন, সামনে অন্যান্য ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদের হারও কমতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'ঋণের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় অনেক ভালো ব্যাংকের তারল্য বেড়ে গেছে। ঋণ দেওয়ার সুযোগ সীমিত থাকায় ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করছে।'
বেশ কয়েকটি ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে তারা ঋণের বিপরীতে ১২ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিচ্ছেন। তবে ঋণের চাহিদা অনেক কমে গেছে এবং ব্যাংকগুলো ঋণ প্রদানে এখন অনেক বেশি সতর্ক।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধান বলেন, সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করা ব্যাংকগুলোর জন্য অনেক বেশি নিরাপদ।
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, 'প্রথমত, এসব বন্ডের গ্যারান্টর সরকার, ফলে টাকা আটকে যাওয়ার ঝুঁকি নেই। দ্বিতীয়ত, এসব বিল-বন্ডের সুদের হার ঋণের সুদের কাছাকাছি।'
তিনি বলেন, 'সবশেষে এসব বিনিয়োগের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে নগদ রিজার্ভ অনুপাত (সিআরআর) ও বৈধ তারল্য অনুপাত (এসএলআর) সংরক্ষণ করতে হয় না।'