জুনের মধ্যেই আইএমএফসহ অন্যান্য সংস্থা থেকে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার আসবে: গভর্নর

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-সহ একাধিক উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান থেকে আগামী জুন মাসের মধ্যেই বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার পাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
আজ বুধবার (১৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, আইএমএফ ছাড়াও বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এএইএইবি) থেকে এই অর্থ আসবে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
এছাড়াও, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চতুর্থ পর্যালোচনা (রিভিউ) সফলভাবে শেষ হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রাজস্ব আদায় ব্যবস্থাপনা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংস্কারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গভীর আলোচনা শেষে এই রিভিউ সম্পন্ন হয়েছে। এর ফলে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইএমএফ-এর চতুর্থ রিভিউয়ের 'স্টাফ লেভেল এগ্রিমেন্ট' সম্পন্ন হওয়ায় আশা করা যাচ্ছে, আগামী জুন মাসের মধ্যেই আইএমএফ ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড় করবে। এর সঙ্গে আরও প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা আসবে বিশ্ব ব্যাংক, এডিবি, এআইআইবি, জাপান এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে।
বাজারভিত্তিক বিনিময় হার সংক্রান্ত বিষয়ে গভর্নর বলেন, 'আইএমএফ-এর সঙ্গে করা চুক্তিতে তারা আমাদের বলেছিল এক্সচেঞ্জ রেট (বিনিময় হার) বাজারভিত্তিক করার জন্য। তবে সে সময় আমাদের বাজার প্রস্তুত না থাকায় আমরা সেটি বাস্তবায়ন করিনি।'
'তবে এখন আমরা দেখছি বাজার যথেষ্ট স্থিতিশীল। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এক্সচেঞ্জ রেট বাজারভিত্তিক করবো', যোগ করেন তিনি।
বাজারে ডলারের তারল্য থাকার কারণে নতুন বিনিময় হার বিদ্যমান হারের কাছাকাছিই থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন গভর্নর।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, 'বড় অঙ্কের বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রয়োজন হলে হস্তক্ষেপ করবে।'
উল্লেখ্য, গেল এপ্রিলে ঢাকায় আইএমএফ-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়। এরপর একই মাসে ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত ব্যাংক-ফান্ড বৈঠকে আলোচনার ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। এই আলোচনায় বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় রাজস্ব প্রশাসন, বিনিময় হার ব্যবস্থা ও অন্যান্য কাঠামোগত সংস্কার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়।
গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, বাজেট সহায়তা পেতে যে সংস্কার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, তা বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব পরিকল্পনার অংশ। এসব উদ্যোগ জাতীয় স্বার্থে গৃহীত এবং উন্নয়ন সহযোগীদের ভূমিকা কেবল কারিগরি সহায়তায় সীমাবদ্ধ থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।