দুই মাসের মধ্যে বিদেশি জ্বালানি কোম্পানিগুলোর বকেয়া পরিশোধ করবে সরকার

জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে জ্বালানি সরবরাহকারী আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর বকেয়া পাওনা পরিশোধ করবে সরকার।
এবিষয়ে সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আগামী দুই মাসের মধ্যেই বিদেশি কোম্পানিগুলোর বকেয়া পরিশোধ করব আমরা। এজন্য আমাকে দরকারি সব ধরনের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
আজ বুধবার বার্তাসংস্থা ইউএনবিকে তিনি বলেন, "বিদেশি কোম্পানিগুলোর বকেয়া পাওনা পরিশোধের ক্ষেত্রে এটা উল্লেখযোগ্য একটা ব্রেক থ্রু হবে বলে আমরা আশা করছি।"
বৈদেশিক মুদ্রা বা ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশ বিদেশি যেসব প্রতিষ্ঠানের থেকে তেল, গ্যাস ও বিদ্যুৎ কিনে থাকে— তাদের অর্থ পরিশোধে সমস্যার মুখে পড়ে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই যার শুরু। একারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও পতন হয়। জ্বালানিখাতেও জমা হয় বিপুল দেনা।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই এসব বকেয়া পরিশোধের চেষ্টা করছে।
সরকারি সূত্রগুলোর মতে, বর্তমানে শেভরন বাংলাদেশ, কাতার এনার্জিসহ আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের কাছে প্রায় ৭০ কোটি ডলার পাবে।
এরসঙ্গে বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর পাওনা যোগ করলে মোট দায়ের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলারের বেশি বলে নাম না প্রকাশের শর্তে ইউএনবিকে জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
সিলেটের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে উত্তোলনের মাধ্যমে দেশের অর্ধেকের বেশি স্থানীয় গ্যাস সরবরাহ করে শেভরন বাংলাদেশ। পাওনাদার কোম্পানির মধ্যে তারাও রয়েছে।
দেশের মোট গ্যাস উৎপাদন (উত্তোলন) ২,৭৯০ দৈনিক মিলিয়ন ঘনফুট, এরমধ্যে শেভরন জোগান দেয় ১,১০৯ মিলিয়ন ঘনফুট। অন্যান্য গ্যাসক্ষেত্র থেকে পাওয়া যায় ৭৭০ মিলিয়ন ঘনফুট। আর ৯১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানি করে সরকার।
সংশ্লিষ্ট শিল্পের ব্যক্তিরা জানান, শেভরনের বকেয়া পাওনা এখন প্রায় ১৯ কোটি ডলার, যা প্রায় পাঁচ মাসের পেমেন্টের সমান। রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোবাংলা প্রতিমাসে প্রায় ৪ কোটি ডলার পরিশোধ করছে।
ভারতের আদানি গ্রুপের কাছে দেনা রয়েছে ৬০ কোটি ডলার। সরকার এরমধ্যেই বকেয়া বিলগুলো পরিশোধ করতে শুরু করেছে বলে জানান কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) আরেক কর্মকর্তা বলেন, "আদানি গ্রুপকে আমরা ১০ কোটি ডলার করে পরিশোধ করছি, যারমধ্যে কিছু আবার বকেয়া বিলও আছে। তাদের নিয়মিত বিল হলো মাসে ৮ কোটি ডলার।"