Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Saturday
June 14, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SATURDAY, JUNE 14, 2025
‘আদালত’ থেকে যে সংকটের শুরু

মতামত

শাখাওয়াত লিটন
13 August, 2024, 05:10 pm
Last modified: 13 August, 2024, 05:34 pm

Related News

  • প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ আট স্থাপনার সামনে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ: ডিএমপি
  • ৮ দিনের রিমান্ড শেষে ‘সেভেন স্টার’ চক্রের প্রধান সুব্রত বাইন কারাগারে
  • ‘মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন’ থেকে বাতিল হল মুজিব বাহিনী, মুজাহিদ বাহিনীর নাম
  • চট্টগ্রামে ছয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলায় মাদ্রাসাশিক্ষককে আমৃত্যু কারাদণ্ড
  • চট্টগ্রামে বিক্ষোভকারীকে লাথি মারা জামায়াতের বহিষ্কৃত কর্মী আকাশের জামিন

‘আদালত’ থেকে যে সংকটের শুরু

শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়ে দেশকে এক বিপজ্জনক সাংবিধানিক শূন্যতার মধ্যে রেখে গেছেন। তাই প্রশ্ন থেকে যায়, যেখানে প্রধান বিচারপতির কাজ হলো সংবিধানকে রক্ষা করা, সেখানে তার পতনের পর কেন তাদের পদত্যাগ করতে হলো? এটা কি বিচার ব্যবস্থারকে অতিরিক্ত রাজনৈতিকীকরণের ফল?
শাখাওয়াত লিটন
13 August, 2024, 05:10 pm
Last modified: 13 August, 2024, 05:34 pm
ইলাস্ট্রেশন: টিবিএস

এমন বাংলাদেশ কেউ কখনো দেখেনি।

একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতনের পর একদিনে দেশের প্রধান বিচারপতিসহ আরো শীর্ষ বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন। শুনতে বিষয়টি ওটিটি প্লাটফর্মের নাটকের মতো শোনালেও, এটি আসলে একটি ক্লাসিক গল্প। এখানে দেখানো হয়েছে কীভাবে গণতন্ত্র মৃত্যুবরণ করেছে।

তবে গল্পটি বাংলাদেশের জন্য অপ্রীতিকর। দেশটির পুলিশের মতো বিচার ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। ১৯৯০ সালে স্বৈরশাসক জেনারেল এইচএম এরশাদের পতনের পরও এমন দেখা যায়নি। 

শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়ে দেশকে এক বিপজ্জনক সাংবিধানিক শূন্যতার মধ্যে রেখে গেছেন। তাই প্রশ্ন থেকে যায়, যেখানে প্রধান বিচারপতির কাজ হলো সংবিধানকে রক্ষা করা, সেখানে তার পতনের পর কেন তাদের পদত্যাগ করতে হলো? এটা কি বিচার ব্যবস্থারকে অতিরিক্ত রাজনৈতিকীকরণের ফল?

সংকটের শিকড়

বর্তমান জাতীয় সংকট ও বিচারহীনতার প্রথম বীজ কীভাবে বপন করা হয়েছিল?

২০১১ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক এক সংবিধান সংশোধন মামলার শুনানি শুরু করেন। এ মামলার জন্য তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সাত সদস্যের বেঞ্চও গঠন করেন। কিন্তু এ সংশোধনীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানে ছিল, বাংলাদেশের রাজনীতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া।

কী সেই সংশোধনী? 

এ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তিত হয়েছিল। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে জনগণকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়।  

এ সংশোধনী পরিবর্তনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বিশিষ্ট আইনবিশেষজ্ঞদের আদালতের পরামর্শদাতা বা অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিশিষ্ট আইনবিশেষজ্ঞরা হলেন- ড. কামাল হোসেন, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার রফিকুল হকসহ আরো অনেকে। তারা গণতন্ত্রের প্রাণ রক্ষায় নির্দলীয় তত্ত্ববধায়ক সরকার রাখার পক্ষে জোরালো যুক্তি দেন। 

তারা যুক্তিতে বলেন, তত্ত্ববধায়ক সরকারের বৈধতায় কোনো প্রশ্ন নেই। কারণ জনগণের আন্দোলনের কারণে এবং জনগণ এ পদ্ধতি গ্রহণ করেছে বলে এ সরকার প্রবর্তন করা হয়েছিল। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- নির্বাচনের সময় কে ক্ষমতায় থাকবে, তা এক বড় রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে সমাধান হয়েছিল।

তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন এ বিশেষজ্ঞরা। কারণ, কোনো বিরোধী দলীয় সরকার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিবে না। আর এতে দেশ আবারও রাজনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত হবে। 

এ মামলার জন্য গঠিত বেঞ্চের শীর্ষ তিন বিচারপতি এ বিষয়ে একমত হন এবং এ সংশোধনীকে রক্ষায় দৃঢ়ভাবে তাদের যুক্তি উপস্থাপন করেন। তারা যুক্তিতে বলেন, সংশোধনীটি কোনো বৈধতার বিষয়ে কোনো সংকট তৈরি করেনি। তবে অপর তিন বিচারপতি তাদের বিপক্ষে মত দেন। তাই এ মামলার ফল টাই হয়ে যায়।

ফলাফল টাই হওয়ায় প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুলের হাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছিল। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন। 

উল্লেখ্য, উচ্চ আদালত এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সাংবিধানিক ঘোষণা করেছিল।

এভাবেই বিচার বিভাগ শেখ হাসিনা সরকারের হাতে নির্বাচনের সময় ক্ষমতায় থাকা ও নির্বাচন প্রভাবিত করার অস্ত্র তুলে দেয়। অথচ এ শেখ হাসিনাই নির্দলীয় সরকারের দাবিতে রাস্তায় সহিংস আন্দোলনে নেমেছিলেন এবং ১৯৯৬ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারকে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তনে বাধ্য করে। 

বাকিটা ইতিহাস। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত শেষ তিনটি সংসদীয় নির্বাচন না ছিল নিরপেক্ষ, না ছিল স্বাধীন।

বিচারকদের সুপারসেশন

২০১০ সালে জ্যেষ্ঠ  দুজন বিচারপতিকে টপকে প্রধান বিচারপিতি হিসেবে নিয়োগ পান বিচারপতি খায়রুল হক। ২০১১ সালের মে'তে নিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগে তিনি ওই রায় দেন। 

খায়রুলকে নিয়োগ দেওয়ার পর বঞ্চিত দুই জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম এ মতিন ও শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান কয়েক মাসে ছুটি চান এবং বিচারপতি মতিন পদত্যাগ করেন। 

এদিকে ২০১১ সালের ১১ মে খায়রুলের পরিবর্তে প্রধান বিচারপতি হন মো. মুজাম্মেল হোসেন। তিনিও জেষ্ঠাতার মানদণ্ড ভাঙেন। তিনি জ্যেষ্ঠ বিচারপতি হলেও তিনি বিচারপতি নাঈমের ছোট ছিলেন। রাষ্ট্রপতির দ্বারা এমন নিয়োগের কারণে পদত্যাগ করেন বিচারপতি নাঈম। 

২০১৩ সালে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তিনি এস কে সিনহা নামে পরিচিত। তবে তার নিয়োগের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার মানদণ্ড ভঙ্গ করা হয়নি। কিন্তু পরবর্তিতে শেখ হাসিনা সরকারে রোষের মুখে পড়েন তিনি। 

২০১৩ সালেই জুলাইয়ে বিচারপতি খায়রুল হককে তিন বছরের জন্য বাংলাদেশ আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় হাসিনা সরকার। পদমর্যাদা অনুসারে তিনি প্রধান বিচারপতির সমান বেতন, বাতা ও অন্যান্য সুবিধার অধিকারী হন। পরবর্তীতে তাকে আরো দুই মেয়াদে একই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। 

আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার এক বছর পর, বিচারপতি খায়রুল আরেকটি বিতর্কিত প্রস্তাব নিয়ে আসেন। তিনি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বাতিল করে সংসদের হাতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিতের অপসারণের ক্ষমতা পুনঃস্থাপনের সুপারিশ করেন। তিনি যুক্তিতে বলেন, "সংসদ জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করে। 

আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার এক বছর পর, বিচারপতি খায়রুল, ২০১৪ সালের জুনে একটি বিতর্কিত ধারণা নিয়ে আসেন। তিনি সংসদের আইন মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটিকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বাতিল করে সংসদের হাতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা পুনঃস্থাপনের সুপারিশ করেন। তিনি যুক্তিতে বলেন "সংসদ জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করে। তাই সব মানুষ এমনকি বিচারপতিদেরও, সংসদের কাছে জবাবদিহিতা থাকা উচিত।"
আরেকটি সংকটের বীজ

তার এই প্রস্তাব আরেকটি সংকটের বীজ বপন করে দিয়ে যায়। এতে প্রধান বিচারপতি হিসেবে সিনহারও পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। 

২০১৪ সালের ১৮ আগস্ট, বিচার বিভাগের ওপর সংসদের ক্ষমতা পুনঃস্থাপনের প্রস্তাব সংসদে অনুমোদন দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর, বিচারপতি খায়রুল তার কার্যালয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন এবং সেখানে প্রস্তাবিত সাংবিধানিক সংশোধনীর পক্ষে দৃঢ় বক্তব্য রাখেন। 

সরকারের অধীনে সুপ্রিম কোর্ট

বিচারপতি খায়রুলের পূরব্সূরি- বিচারপতি মুস্তাফা কামাল, বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম এবং বিচারপতি তফাজ্জল ইসলাম। তারা তিন বছর আগে সংবিধান সংশোধন বিষয়ক এক বিশেষ সংসদীয় কমিটিতে যোগদেন। তারা সেসময় অসদাচরণ বা অক্ষমতার দায়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের (এসজিসি) দ্বারা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের পক্ষে মত দিয়েছিলেন।

২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদ ১৬তম সংশোধনী পাস করে। এর মাধ্যমে তারা সংসদকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা প্রদান করে এবং সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকেও বাতিল ঘোষণা করে। 

তবে সঙ্গে সঙ্গেই সংশোধনীর বৈধতা জানতে চেয়ে হাই কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়। তাই হাসিনা সরকার আপিল বিভাগে আরেকটি আপিলের আবেদন করে আইনি লড়াই শুরু করে। কিন্তু এ লড়াইয়ে হেরে যায় সরকার পক্ষ। কারণ তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। 

১৬তম সংশোধনী বাতিলের প্রধান কারণগুলোর একটি হলো, এ একতরফা নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুসারে বিশ্বস্ত ছিলেন না। 

এ রায়ের প্রধান প্রণেতা ছিলেন বিচারপতি সিনহা। তিনি রায়ে সরকারের ঔদ্ধত্যতা, ব্যাপক দুর্নীতি ইত্যাদির মতো শাসনব্যবস্থার দুঃখজনক অবস্থা সম্পর্কে কিছু সমালোচনামূলক পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করেছিলেন। 

আগস্ট মাসে রায়ের সম্পূর্ণ কপি প্রকাশ হলে সরকারের রোষানলে পড়েন বিচারপতি সিনহা। তাকে প্রধান বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করতে এবং ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়।

যখন হাইকোর্ট সংশোধনীটিকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে তখন সংসদে ও সংসদের বাইরে বিচার বিভাগকে বিভিন্নভাবে আক্রমণ করা হয়। দুঃখজনকভাবে, বাংলাদেশ আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি খায়রুল হকও ১৬তম সংশোধনী বাতিলের জন্য হাই কোর্টকে আক্রমণ করার স্রোতে যোগ দিয়েছিলেন।

বিচারপতি সিনহা বিচার বিভাগকে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করার জন্য বেশ কয়েকবার বিচার বিভাগের কার্যকর পৃথকীকরণের পক্ষে আওয়াজ তুলেছিলেন।

সিনহার বিদায়ের পরে, একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছিল যাতে অভিযোগ করা হয় বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে ১১টি অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের মধ্যে অর্থপাচার, দুর্নীতি এবং নৈতিক অবক্ষয়ের কথা উল্লেখ ছিল।

বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের কপি আগেই রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছ থেকে আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

প্রধান বিচারপতির পদটি ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শূন্য ছিল।

এ চার মাস আপিল বিভাগের সবচেয়ে জেষ্ঠা বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহাব মিঞা প্রধাণ বিচারপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। মানদণ্ড অনুসারে তার নিয়োগের কথা থাকলেও প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তিনি বিচারপতি ওয়াহাব মিয়ার ছোট ছিলেন। পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়ার প্রতিবাদে পরবর্তীতে বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন ওয়াহাব মিঞা।

এক দলপন্থী বিচার বিভাগ

২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রধান বিচারপতি মাহমুদ হোসেনের স্থলাভিষিক্ত হন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকি। ফয়েজ সিদ্দিকির প্রধান বিচারিপতি হিসেবে শেষ কর্ম দিবসের দিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঘোষণা আসে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা না দেওয়া হবে না। 

গত ২৫ সেপ্টেম্বর এ ভিসা নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দলের সাথে সুর মেলান তিনি। তিনি বলেন, "আমি ব্যক্তিগতভাবে কখনও আমেরিকা সফর করিনি। ভবিষ্যতেও কখনও যাব না।"
বিচারপতি সিদ্দিকীর মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। হাসিনা নেতৃত্বাধীন স্বৈরশাসকের সহযোগী হওয়ার অভিযোগে, গত শনিবার ছাত্র আন্দোলনের মুখে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। 

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ২০১১ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি খুব দ্রুতই পদন্নোতি পেয়েছিলেন। তখন ২০২০ সালে হাইকোর্টের অনেক বিচারপতিকে টপকেই আপিল বিভাগে পদন্নোতি পান। 

২০২২ সালে, তিনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। তার নেতৃত্বে বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য নাম প্রস্তাব করেছিলেন এবং সেই কমিশন ৭ জানুয়ারি নির্বাচন মঞ্চস্থ করার দায়িত্ব পায়। 

সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল বিষয়ক হাইকোর্টের আদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করায় এ প্রধান বিচারপতির ওপর ক্ষুব্ধ ছিল শিক্ষার্থীরা। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, "কেন রাস্তায় এত আন্দোলন শুরু হয়েছে? আপনি কি আন্দোলনের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের রায় পরিবর্তন করবেন?"

এখন কী করতে হবে

ভারত ও পাকিস্তানে পরবর্তী ১০ বছরে কারা প্রধান বিচারপতি হবেন তা বলা সহজ। এর কারণ তারা কঠোরভাবে জেষ্ঠতার মানদণ্ড অনুসরণ করে।

কিন্তু বাংলাদেশে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে জেষ্ঠতার মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়। রেকর্ড বলছে ২৫ জন প্রধান বিচারপতির মধ্যে ১৪ জনকে জেষ্ঠতার মানদণ্ড উপেক্ষা করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শুধু প্রধান বিচারপতির নিয়োগের ক্ষেত্রেই নয়, হাইকোর্ট থেকে আপিল বিভাগে বিচারপতি পদোন্নতির ক্ষেত্রেও জেষ্ঠতার মানদণ্ড প্রায়ই উপেক্ষিত ছিল।

শনিবার পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়া পাঁচজন বিচারপতিও হাইকোর্ট বিভাগের অনেক সহকর্মীকে টপকে এ পর্যায়ে এসেছেন।

বিচারিক সুপারসেশন হলো জ্যেষ্ঠতার মানদণ্ড উপেক্ষা করে নিয়োগ। গত ১৫ বছরে বিচারিক সুপারসেশন এত ব্যাপক ছিল যা পূর্বের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। এসব সিদ্ধান্ত ছিল আত্মঘাতী এবং এগুলো প্রধান বিচারপতি এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সততাকে ক্ষুণ্ন করছে। 

প্রধান বিচারপতি ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার প্রতীক এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে গণতন্ত্রের স্বাক্ষর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বিচারিক সুপারসেশন দ্বারা প্রধান বিচারপতির কার্যালয়কে অবমূল্যায়ণ করা হয়েছে। এ কারণে বিচারকরা ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক অবস্থানের সাথে মানিয়ে নিতে উৎসাহিত হয়েছে। জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে আবদুল ওয়াহাব মিঞাকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ায় প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তখন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, প্রধান বিচারপতি কে নিয়োগ করবেন তা নির্ধারণ করার এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির।

কিন্তু সমস্যা হলো, রাষ্ট্রপতির কার্যালয় অনেক আগেই রাজনীতিকরণ হয়ে গেছে। বিচারপতি শাহাবউদ্দিন আহমদের পর থেকে প্রতিটি দলীয় সরকার এমন ব্যক্তিদের রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনীত করেছে যারা দলের প্রতি অন্ধভাবে বিশ্বস্ত ছিলেন।

এই কারণে, রাষ্ট্রপতির একমাত্র কাজ হল প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করা এবং জনগণের প্রয়োজনে তাদের কণ্ঠস্বর না হওয়া।

নিয়োগের উপর কোনো নির্দিষ্ট আইন না থাকায়, সরকার হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে যে কাউকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করে। নিম্ন আদালতের পরিস্থিতিও হতাশাজনক, কারণ এটি মূলত দলীয় সরকারের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

রাষ্ট্রের কোনো কর্মচারী যাতে তার ক্ষমতার সীমা অতিক্রম না করে তা দেখার দায়িত্ব বিচার বিভাগের। কিন্তু প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতিদের নিয়োগ ও পদোন্নতির সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকে, তখন এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি সমঝোতা হয়ে যায়।

অসংখ্য উদাহরণ বলছে, এমনটি বাংলাদেশেই ঘটেছে। ক্ষমতা এমনভাবে কেন্দ্রীভূত হয়েছে যে সবাই বছরের পর বছর ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। আর এসবই এ দূর্যগকে ডেকে এনেছে। 

অতএব, প্রতিটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সেটি হোক রাষ্ট্রপতির কার্যালয় কিংবা বিচার বিভাগ, সংসদ থেকে স্থানীয় সরকারী সংস্থা সবই রাজনীতি থেকে মুক্ত হওয়া প্রয়োজন। বারবার ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলগুলি তাদের সংকীর্ণ স্বার্থের জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলিকে অবমূল্যায়ণ ও ধ্বংস করেছে। এটি এবার বন্ধ করার সময় এসেছে।
 

Related Topics

টপ নিউজ

আদালত / প্রধান বিচারপতি / পদত্যাগ / সংশোধনী

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • সুযোগ থাকলে ঢাকার সব বাসা-বাড়িতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিতাম : জ্বালানি উপদেষ্টা
  • এবার এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে 'বোমা হামলার' হুমকি, থাইল্যান্ডে জরুরি অবতরণ
  • ‘সরকারকে শত্রু মনে করে মানুষ’: দ্য গার্ডিয়ান-এর সঙ্গে সাক্ষৎকারে প্রধান উপদেষ্টা
  • ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালাতে ১০০-র বেশি ড্রোন পাঠিয়েছে ইরান: আইডিএফ
  • বাংলাদেশ থেকে ঝুট কাপড় সরবরাহ বন্ধে বিপাকে ভারতের পানিপথের টেক্সটাইল রিসাইক্লিং শিল্প
  • ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ৫ জনের মৃত্যু, ৪ জনই বরগুনার

Related News

  • প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ আট স্থাপনার সামনে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ: ডিএমপি
  • ৮ দিনের রিমান্ড শেষে ‘সেভেন স্টার’ চক্রের প্রধান সুব্রত বাইন কারাগারে
  • ‘মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন’ থেকে বাতিল হল মুজিব বাহিনী, মুজাহিদ বাহিনীর নাম
  • চট্টগ্রামে ছয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলায় মাদ্রাসাশিক্ষককে আমৃত্যু কারাদণ্ড
  • চট্টগ্রামে বিক্ষোভকারীকে লাথি মারা জামায়াতের বহিষ্কৃত কর্মী আকাশের জামিন

Most Read

1
বাংলাদেশ

সুযোগ থাকলে ঢাকার সব বাসা-বাড়িতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিতাম : জ্বালানি উপদেষ্টা

2
আন্তর্জাতিক

এবার এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে 'বোমা হামলার' হুমকি, থাইল্যান্ডে জরুরি অবতরণ

3
বাংলাদেশ

‘সরকারকে শত্রু মনে করে মানুষ’: দ্য গার্ডিয়ান-এর সঙ্গে সাক্ষৎকারে প্রধান উপদেষ্টা

4
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালাতে ১০০-র বেশি ড্রোন পাঠিয়েছে ইরান: আইডিএফ

5
আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ থেকে ঝুট কাপড় সরবরাহ বন্ধে বিপাকে ভারতের পানিপথের টেক্সটাইল রিসাইক্লিং শিল্প

6
বাংলাদেশ

ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ৫ জনের মৃত্যু, ৪ জনই বরগুনার

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net