আন্দোলন চলবে, আলোচনাও চান শাবি শিক্ষার্থীরা

নিজেদের দাবি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এজন্য শিক্ষামন্ত্রীকে শাবি ক্যাম্পাসে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষমন্ত্রীকে ক্যাম্পাসে আমন্ত্রণ জানান শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপাচার্যের পদত্যাগসহ তাদের সমস্ত দাবি দ্রুত মেনে নেওয়ারও আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন মোহাইমিনুল বাশার রাজ। উপাচার্য পদত্যাগের পূর্ব পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে রাজ বলেন, 'পুলিশি হামলার ঘটনায় আহত এবং অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সকল ব্যয় প্রধানমন্ত্রী বহন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে অসুস্থ এতজনকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।'
তিনি বলেন, 'সরকারের নির্দেশনায় শিক্ষামন্ত্রী আমাদের মূল দাবিসহ অনান্য দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী তার গতকালকের প্রেসব্রিফিংয়ে আমাদের দাবি ও বিভিন্ন সমস্যা প্রসঙ্গে আলোচনার জন্য শাবিতে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরাও আমাদের দাবি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তার সাথে আলোচনার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি। এর মধ্যে শিক্ষার্থীরা তার সামনে উপস্থাপনের জন্য বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছে। আমরা শাবি শিক্ষার্থীরা শিক্ষামন্ত্রীকে আমাদের ক্যাম্পাসে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।'
শিক্ষামন্ত্রী দ্রুতই ক্যাম্পাসে আসবেন, এমন আশা প্রকাশ করেন রাজ। তিনি বলেন, 'একইসঙ্গে আমরা এ-ও আশা করছি যে, এরইমধ্যে আমাদের মূল দাবিসহ অন্যান্য ব্যাপারে যে সমস্ত আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সেগুলোও অতিসত্বর পূরণ করা হবে।'
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের পূর্ব পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথাও পুণর্ব্যক্ত করেন রাজ। তিনি বলেন, 'আজ রাতেও আমরা ক্যাম্পাসে মুক্ত আলোচনা করবে। মুক্ত আলোচনার প্রস্তাবনাগুলো শিক্ষামন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হবে।'
১৩ জানুয়ারি থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ওইদিন থেকেই উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন তারা। এই দাবিতে ১৯ জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। গত বুধবার ভাঙান তাদের টানা ১৬৩ ঘণ্টার অনশন শাবিপ্রবির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং অধ্যাপক ইয়াসমিন হক।
এদিকে অনশন চলাকালে একবার ও অনশন ভাঙার পর অধ্যাপক জাফর ইকবালের মধ্যস্থতায় গত বুধবার আরেকবার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।