ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে ইটভাটা মালিক-শ্রমিকদের বিক্ষোভ

সাভারের তুরাগ এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় ইটভাটা মালিক ও শ্রমিকরা। অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের চলমান অভিযানের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর ২টা থেকে মহাসড়কের উভয় লেনে এ অবরোধ শুরু হয়।
বিক্ষোভের কারণে মহাসড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় ৪৫ মিনিট পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনকারীদের সড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করলেও তারা তাতে সাড়া না দিলে ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ২টার কিছু আগে ইটভাটায় অভিযানের প্রতিবাদে মহাসড়কে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং প্রশাসনের অভিযান বন্ধের দাবি জানান। পরে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল মিয়া বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযানের প্রতিবাদে ইটভাটার মালিক-শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে ছিল।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সালেহপুর এলাকার এ.জেড.বি অ্যান্ড কোম্পানির এক ইটভাটা মালিক বলেন, হঠাৎ করেই উপজেলা প্রশাসন আমাদের ইটভাটাগুলোতে অভিযান চালিয়ে চিমনিগুলো গুড়িয়ে দিচ্ছে। প্রতিটি ব্রিক ফিল্ডে আমাদের ৩ থেকে ৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা। এভাবে ভেঙে দিলে তো আমরা পথে বসবো। আমাদের অন্তত ৩ মাস সময় দেওয়া হোক, যাতে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি। প্রয়োজনে এই ব্যবসা ছেড়ে দেব, কিন্তু কিছুটা সময় দরকার। একেকটা ইটভাটার সঙ্গে অন্তত ২০০ পরিবারের জীবিকা জড়িত, তাদের কী হবে?
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরাও তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে ভাটা চলছে, আগে কোনো সমস্যা হয়নি। এখন প্রশাসন ভাটা ভেঙে দিচ্ছে। আমরা কোথায় যাবো? কীভাবে খাবো? একেকটা ভাটায় ৩০০-৪০০ শ্রমিক কাজ করি, আমাদের ভবিষ্যৎ কী?
এ বিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুবকর সরকার বলেন, 'হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে, আগামী ১৭ তারিখের মধ্যে সব অবৈধ ইটভাটা ভেঙে ফেলতে হবে। আমরা সেই নির্দেশনা অনুসরণ করেই কাজ করছি।'
দুপুর ৩টার দিকে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সওগাতুল আলম বলেন, 'দুপুর ২টা থেকে বিক্ষুব্ধরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। সেনাবাহিনী তাদের সরিয়ে দিলেও তারা এখনো আশপাশে অবস্থান করছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।