'শিবিরের হামলায়' শিক্ষার্থী আহত, প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি

সিলেটের এমসি কলেজে মিজানুর রহমান রিয়াদ নামের এক শিক্ষার্থীকে হামলা চালিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে। হামলায় আহত রিয়াদ জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
আজ রাত ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে সংগঠনটি। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে সিলেট থেকে টিবিএসের প্রতিবেদক জানাচ্ছেন, বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাতে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় রিয়াদকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ছাত্রাবাসের ১ম ব্লকের ১০১ নং কক্ষের থাকেন তিনি।
রিয়াদের রুমমেট বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র জুনায়েদ আহমদ জানান, রাতের খাবার শেষে তারা ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সময় দরজায় প্রচণ্ড আঘাতের শব্দ পান। দরজা খুলে দেওয়ার সাথে সাথে এমসি কলেজ ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি জওহর লুকমান মুন্নার নেতৃত্বে ১০-১২জন শিবির কর্মী রুমে ঢুকে রিয়াদকে লাথি দিয়ে বিছানা থেকে নিচে ফেলেন।
জুনায়েদ জানান, 'হামলাকারীরা রিয়াদকে জিজ্ঞেস করেন- কুয়েটের ঘটনায় তুই শিবিরকে নিয়ে ফেসবুকে কী লিখেছিস। এরপর তারা রিয়াদকে চড়-থাপ্পড়, লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে পাশের রুম থেকে রড নিয়ে রুমে প্রবেশ করে নাজমুল ও সালমান।' রিয়াদের রুমমেট জুনায়েদ এগিয়ে এলে, তাকেও মারধর করে রুমের বাইরে বের করে দেওয়া হয়। দরজা লাগিয়ে রড দিয়ে বেধড়ক পিঠানো হয় রিয়াদকে।
এসময় হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিয়াদের পায়ের রগ কাটার চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এসময় রুমের বাইরে থাকা জুনায়েদের চিৎকারের ছাত্রাবাসের অন্যান্য শিক্ষার্থী ও কর্মচারী জড়ো হন। পরে শিবিরের নেতাকর্মীরা রক্তাক্ত অবস্থায় রিয়াদকে রুমের বাইরে টেনে বের করে ফেলে চলে যান।
রিয়াদের সহপাঠীরা জানান, মিজানুর রহমান রিয়াদ জুলাই বিপ্লবের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় একটি নিউজের কমেন্টে লিখেন- 'কীসের জন্য এত ত্যাগ করলাম। দিনের বেলা পুলিশের টিয়ারশেল আর লাঠিচার্জ। রাতে পালিয়ে থাকলাম। সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাসের স্বপ্নে এত ছাত্র প্রাণ দিল। এখন যদি গুপ্ত সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বসেন তাহলে এই ত্যাগের মূল্য কী?'
রিয়াদের এই কমেন্টের জেরে এমসি কলেজ শিবিরের নেতাকর্মীরা তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ।
এ বিষয়ে শিবিরের সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি শাহিন আহমদ বলেন, 'ঘটনার সঙ্গে ছাত্র শিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অহেতুক দায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।'
শাহপরাণ থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, 'আমাদের কাছে এখনো কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'